সরকার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর জন্য এক কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল এবং ১০ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ২৭২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল এবং ১০ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তেল ক্রয়ের ব্যাপারে গ্রিন অয়েল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ, মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস লিমিটেড থেকে এই তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার রাইস ব্রান তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৬২ টাকা ৫০ পয়সা। এ হিসেবে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার তেল কেনার জন্য খরচ হবে ১৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই তেল তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হবে। এর মধ্যে গ্রিন অয়েল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে ২০ লাখ লিটার, মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেডের কাছ থেকে ৪৫ লাখ লিটার এবং মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস লিমিটেডের কাছ থেকে ৪৫ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল কেনা হবে।
এছাড়া, মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য মেসার্স মদিনা ট্রেডিং করপোরেশন এবং মেসার্স পায়েল ট্রেডার্স থেকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। মদিনা ট্রেডিং থেকে ৫ হাজার টন এবং পায়েল ট্রেডার্স থেকে ৫ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৪.২৩ টাকা, যার জন্য মোট ব্যয় হবে ৯৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
এছাড়া, বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা হলো দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণের জন্য স্পট মার্কেট থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন। যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এই এলএনজি দুটি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রথম এলএনজি কার্গোটি সরবরাহ করবে মেসার্স টোটালএনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড, যেখান থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪.৪৮ মার্কিন ডলার দরে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ের জন্য মোট ব্যয় হবে ৬৯৪ কোটি ৪৭ লাখ ৬৭২ টাকা। দ্বিতীয় এলএনজি কার্গোটি একই প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহ করা হবে, যার জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪.২২ মার্কিন ডলার দরে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে এবং এর মোট ব্যয় হবে ৬৮২ কোটি ৩ হাজার ৮ টাকা।
এর মাধ্যমে সরকার আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এলএনজি আমদানির মাধ্যমে দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর পাশাপাশি, টিসিবির জন্য সাশ্রয়ী তেল ও ডাল সরবরাহের জন্য এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ।

এসব সিদ্ধান্ত সরকারের বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে টিসিবির মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য সাশ্রয়ী পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখা এবং দেশীয় অর্থনীতি এবং জ্বালানি সেক্টরের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা সম্ভব হবে।
পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে টিসিবির বস্তায় শেখ হাসিনার নাম, এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া
দেখুন: দুর্নীতির কারণে টিসিবির ৩৭ লাখ কার্ড বাতিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা |
ইম/