26 C
Dhaka
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাগযুদ্ধ, তর্ক-উত্তেজনায় পণ্ড বৈঠক

যুদ্ধ বন্ধ-সংক্রান্ত সংলাপ এবং খনিজ উপাদান হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ওয়াশিংটন সফরে গিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছিলেন তিনি।

কিন্তু উত্তেজনা ও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সেই বৈঠক। এরপর ওয়াশিংটন থেকে জেলেনস্কি ফিরে গেছেন কোনো প্রকার চুক্তি সই না করেই। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে (হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) আয়োজিত বৈঠকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে মতপার্থক্য একসময় চিৎকার-চ্যাঁচামেচির পর্যায়ে চলে যায়। জেলেনস্কি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন দাবি করে ট্রাম্প বলেন, মানুষ মারা পড়ছে। যুদ্ধের জন্য সেনার সংখ্যাও কমছে ক্রমশ। আপনার হাতে কার্ড (বিকল্প) নেই। একবার আমরা চুক্তি সই করলে আপনি ভালো অবস্থানে চলে যাবেন। কিন্ত আপনাকে আদৌ কৃতজ্ঞ মনে হচ্ছে না। সত্যি কথা বলতে কি এটা ভালো কোনো বিষয় নয়।

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাগযুদ্ধ, তর্ক-উত্তেজনায় পণ্ড বৈঠক

ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেন, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করতে চাইলে ইউক্রেনকে ছাড় দিতে হবে। তিনি বলেন, ছাড় দেয়া ছাড়া আপনি কোনো চুক্তি করতে পারবেন না। তাই এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় তাকে (জেলেনস্কি) কিছু ছাড় দিতে হবে। কিন্তু আশা করি, বড় কোনো ছাড় দিতে হবে না যেমনটা লোকে বলে বেড়াচ্ছে।

ট্রাম্পের এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নাম উল্লেখ করে বলেন, একজন খুনিকে কোনো ছাড় দেয়া উচিত নয়। পুতিনের বিষয়ে ট্রাম্পের নমনীয় অবস্থানের সমালোচনা করেন জেলেনস্কি। একজন খুনির সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা না করার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শুধু ট্রাম্প নয়, জেলেনস্কির সঙ্গে বাগ্ বিতণ্ডায় জড়ান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও। ওভাল অফিসে বসে বিতণ্ডায় জড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জেলেনস্কি অসম্মান করেছেন মন্তব্য করে ভ্যান্স বলেন, ‘আপনি একবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না। মাথা নেড়ে ভ্যান্সের কথায় সায় দেন ট্রাম্প। এ সময় গলার স্বর উঁচু করে জেলেনস্কি উত্তর দেন, বহুবার বলেছি, আমেরিকার জনগণকে ধন্যবাদ।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল হওয়ার পর জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জেলেনস্কির উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরও হোয়াইট হাউস জানায়, দুই রাষ্ট্রনেতা কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি সংবাদ সম্মেলনে আসবেন। সেখানে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে একটি চুক্তিতেও সই করবেন তারা।
কিন্ত এর কিছুক্ষণ পর হোয়াইট হাউস এই সংবাদ সম্মেলন বাতিল করার কথা জানায়। এরপর জেলেনস্কি ও তার সঙ্গে থাকা ইউক্রেনের অন্য কর্মকর্তাদের হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া একে পোস্টে লিখেছেন, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র ও এ দেশের শ্রদ্ধার জায়গা ওভাল অফিসকে (হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) অসম্মান করেছেন। তিনি বলেন, যেদিন তিনি (জেলেনস্কি) শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, আবার (হোয়াইট হাউসে) ফিরে আসতে পারেন।

রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে ট্রাম্পের পূর্বসূরি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে কয়েক’শ কোটি ডলারের অস্ত্র ও অর্থসহায়তা পেয়েছে ইউক্রেন; কিন্তু গত ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পরে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। জেলেনস্কির সমালোচনা করছেন ট্রাম্প। যুদ্ধের জন্য জেলেনস্কিকে দোষারোপ করে আসছিলেন তিনি। তাই সবার চোখ ছিল গতকালের বৈঠকে।

দেখুন:  নতুন রাজনৈতিক দলের সূচনা বক্তব্য রাখছেন নাহিদ

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন