জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ডিগ্রীরচর জামিয়া মফিজিয়া মাদ্রাসার সার্বিক উন্নয়নের জন্য গত অর্থবছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ পাওয়া ৭ লাখ টাকার কাবিটা প্রকল্প নিয়ে মাদ্রাসা কমিটির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ ও বক্তব্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে শুক্রবার বিকেলে মাদ্রাসা সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মাদ্রাসা কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম ফকির অভিযোগ করে বলেন, সরকারি বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহারের বদলে নয়-ছয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা চলছে। “আমরা চাই স্বচ্ছতা থাকুক। কিন্তু এখানে হিসাব মিলছে না। বরাদ্দের টাকার একটি বড় অংশ গায়েব হয়ে যাচ্ছে বলে আমাদের সন্দেহ।”
অন্যদিকে মাদ্রাসা কমিটির সদস্য শাহজামাল মেম্বার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী চলছে। প্রতিটি কাজের নথি ও রেকর্ড রয়েছে। কিছু ব্যক্তি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব অভিযোগ তুলছে।”
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। কেউ দাবি করছেন বরাদ্দের অর্থ ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ ও তদন্ত হওয়া জরুরি, আবার কেউ বলছেন দ্রুত কাজ শেষ করাই এখন প্রয়োজন। স্থানীয়দের ভাষায়— “টাকার হিসাব সবার সামনে খোলামেলা না হলে উন্নয়নের বদলে বিরোধ বাড়বে।”
এ বিষয়ে মাদ্রাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুর রহমান মলিন বলেন, “আমরা শতভাগ আল্লাহ ও রাসূলকে রাজি খুশি করাতেই এই কমিটির দায়িত্ব নিয়েছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি বিতাড়িত হওয়ার পর আমরা এ মাদ্রাসার ধাপে ধাপে উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। তবে একটি মহল এ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে নীলনকশা একে যাচ্ছে। তারা সঠিক তথ্যে না দিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। মাদ্রাসার সম্মান ক্ষুণ্ণ করে তাদের এই চলমান কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাওলানা আব্দুল্লাহ সাহেব। প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বাবু বলেন, “মাদ্রাসায় কাজ করি পূর্ণতার আশায়, বিকল্পের কোনো সুযোগ নেই। ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সাত সদস্যের একটি উন্নয়ন কমিটি করতে হবে। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” তিনি প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ না করার আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আঃ ওয়াহাব মাস্টার, চরপুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী সহিদুর রহমান, স্থানীয় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শহিদুল্লাহ বেপারী, কৃষকদলের সভাপতি মাহমুদ আলী মেম্বার, ছাত্রদলের সভাপতি নুরনবী ইসলাম তানভীরসহ অনেকেই।
পড়ুন : শুকনো খাবার প্যাকেট নিয়ে অসহায়দের পাশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা


