34 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫

ঢালিউডে প্রভাব বাড়ছে কলকাতার নায়িকাদের

বেশ কয়েকবছর ধরেই ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে কলকাতার নায়িকাদের ভিড় একটু বেশি। ঈদের মতো বড় উৎসব এলেই উপস্থিতি মেলে এসব অভিনেত্রীদের। ঈদ সিনেমায় দেশি নায়িকারা থাকলেও কলকাতার নায়িকাদের নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ একটু বেশি। ভিড় করে সিনেমাহলে। টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি। একেই তো বলে সিনেমার রমরমা বাজার।

নুসরাত জাহান আর শাকিব খানের চাদ মামা গান অথবা মিমি চক্রবর্তীর লাগে উরা ধুরা অথবা ইধিকা পালের ও প্রিয়তমা। এ সুপারহিট গানগুলো যেন ঈদের আনন্দকে দ্বিগুণ করে ফেলে। দর্শকও প্রতি ঈদে অপেক্ষায় থাকে নতুন কোন ধামাকা গানের। মুক্তির পরপরই সবার মুখে মুখে গানের রিলিক্সগুলো! কিন্তু এদেশের নায়িকাদের গানের ক্ষেত্রে এই উত্তেজনা খানিকটা কম। কিন্তু কেন? সমস্যা কি গানে নাকি মূল আকর্ষণ নায়িকায়?

আমরা সবাই জানি ঢাকাই সিনেমা নানা সংকটের মধ্য দিয়েও বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সারা বছর বাণিজ্যিক ঘরানার সিনেমাগুলো খুব একটা ব্যবসা করতে না পারলেও ঈদে জন্ম নেয় নতুন আশা। এতেই যেন তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। শাকিব, সিয়াম, নিশো, শুভকে নিয়ে সিনেমা থাকলেও নায়িকার ব্যাপারে প্রযোজক-পরিচালকেরা ভাবছেন একটু আলাদা ভাবে। তাহলে কি আমাদের দেশে নায়িকা সংকট? এ কথা অবশ্য মানতে নারাজ সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। নাকি কলকাতার নায়িকাদের দেখতেই বাড়ে দর্শকের ভিড়!

হুট করে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে কলকাতার নায়িকাদের আনাগেনা একটু বেশি দেখা যাচ্ছে, হোক গল্পের প্রয়োজনে অথবা আইটেম গানে। এদেশের বড় উৎসবেও উপস্থিতি মেলে এসব অভিনেত্রীদের। অন্যদিকে আমাদের দেশের নায়িকারা ডায়েট করে, জিম করে, নতুন লুকে হাজির হলেও সিনেমার অফারগুলো হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে পরিমণি, মিম, নুসরাত, দীঘি কিংবা পূজা চেরির কাছ থেকে! প্রযোজক-পরিচালকরা বলছেন নায়িকা তো অনেক আছে কিন্তু দর্শকের কাছে নায়িকার হিসাব অন্যরকম। তারা চায় নতুন লুক, নাচ, গান, অভিনয়— সব কিছুতেই হতে হবে পারদর্শী মানে বিদেশি নায়িকাদের মতন।
বর্তমানে নামসর্বস্ব অনেক নায়িকাই আছেন, দর্শক চাহিদায় সিনেমার কোনো কাজে আসেন না তারা।

এ ছাড়া ব্যক্তিগত গুজব-গুঞ্জন, বিয়ে-বিচ্ছেদসহ আরও অনেক কারণে প্রতিষ্ঠিত নায়িকারাও নিজেদের ইমেজ হারাচ্ছেন। তাদের কারও কারও নাম শুনলেই দর্শকের মধ্যে আতঙ্ক চলে আসে। এসব তারকাদের নিয়ে কিভাবে সিনেমা নির্মাণ সম্ভব? এদের তো ব্যক্তিজীবনই ঠিক নেই, জীবনাদর্শ নেই যেমনটা ছিল শাবানা, ববিতা, শাবনূর কিংবা পূর্ণিমার বেলায়।

৯০ দশকের পর্দা কাঁপানো মৌসুমী, শাবনূর, পপি, পূর্ণিমাদের মতো নায়িকা এখন আর তৈরি হচ্ছে না। এদের পরবর্তী যারা ছিলেন ব্যস্ত নায়িকা, যাদের নিয়ে সিনেমাপাড়া ও দর্শকদের মাঝে আলোচনার ঝড় বইত, এখন আর তাদের সেই রমরমা অবস্থা নেই। তুষি, স্পর্শিয়া, বাঁধন, মন্দিরা, ঐশী, ফারিণ, সুনেরাহ, শিমু যারা টিভি থেকে সিনেমায় এসেছেন তাদের হাতেও এখন সিনেমার কাজ নেই। তাই আপাতত নায়িকা হিসাবেও নেই আলোচনায়।

শাবনুর ফিরবে ফিরবে করেও ফিরলেননা। বিদেশে একটি সিনেমায় নবাগত নতুন নায়িকার পাশাপাশি সিনিয়র নায়িকাকে দেয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। যাকে বলে সিনেমায় স্পেশাল অ্যাপিয়ারেন্স। কিন্তু এদেশে সিনিয়র মানে তার নায়িকার চাপ্টার শেষ। এ সুযোগে দেশের সিনেমায় যেন প্রভাব খাটাচ্ছেন কলকাতার নায়িকারা। ঢাকাই সিনেমায় বাড়ছে তাদের দর্শক চাহিদাও। আমরাও আশা রাখি, দুই বাংলার চলচ্চিত্র নির্মাণে একটা ভারসাম্যের নীতি হবে। আশা রাখি যে হারে ওপার থেকে শিল্পী ও লগ্নির টাকা আসছে সেহারে ঢাকা থেকেও যাবে কলকাতায়। ভালোবাসাটা দুই তরফা না হলে জমেনা।

পড়ুন : ঈদে বড়পর্দায় ছয় সিনেমার লড়াই

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন