দেশের পাঁচটি জেলায় চলছে মৃদু তাপমাত্রা, যা চলমান রূপে আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া এবং রাঙ্গামাটি জেলায় তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপদাহের ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, এবং ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো জানায়, রোববার সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি হতে পারে এবং তাপদাহ আরও কয়েকদিন ধরে চলতে পারে।
তবে তাদের পূর্বাভাসে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও, তা সপ্তাহের শেষদিকে হতে পারে। বিশেষ করে, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরও গরমের তীব্রতা ছিল বেশ বেশি, এবং আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন যে ২০২৪ সালে দেশবাসীকে অনেক বেশি তাপদাহ মোকাবেলা করতে হতে পারে।
এ বছরের গরমের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এপ্রিল এবং মে মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল, এবং গত বছর এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত টানা ৩৫ দিন তাপপ্রবাহ চলেছিল। এবছরও সেই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে, তবে একটানা দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ চলতে নাও পারে।
শীতকালেও অস্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ফেব্রুয়ারিতে আরও ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। শীতকালেও বৃষ্টিপাত প্রায় ৭৭ শতাংশ কম ছিল, যা দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের পূর্বাভাসকে নিশ্চিত করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ইতোমধ্যে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়ে দিয়েছে যে, মার্চে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে, এবং পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, বাড়তে শুরু করতে পারে এবং এটি অব্যাহত থাকবে। শীতকালেও বেশি থাকার ইঙ্গিত রয়েছে, যা গরমের তীব্রতা বাড়িয়ে তুলবে।
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন ইতোমধ্যে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে এনেছে। গত বছর এপ্রিল মাসে প্রবল গরমে একে একে অনেক রেকর্ড ভেঙে গেছে। এই এক মাসের তাপদাহে প্রচুর প্রাণহানি ঘটেছে এবং অনেক ক্ষতি হয়েছে কৃষি উৎপাদনে। নদী এবং জলাশয়ে পানির স্তর কমে গেছে, রেলপথ বেঁকে গেছে, এবং রাস্তার বিটুমিন উঠে গেছে।
প্রসঙ্গত, গড় ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপদাহ, ৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মাঝারি তাপদাহ, ৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তীব্র তাপদাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর বেশি হলে অতি তীব্র তাপদাহ হিসাবে গণ্য করা হয়।
এদিকে, রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় কমার সম্ভাবনা নেই। আকাশ আংশিক মেঘলা হলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে এবং রোদের দাপটে গরমের অনুভূতি বাড়বে। রবিবার (১৫ মার্চ) আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া এবং রাঙ্গামাটি জেলা গুলোতে মৃদু তাপদাহ অব্যাহত থাকবে। তবে সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, এই সময়ে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের অপরিবর্তিত থাকবে। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া থাকতে পারে, এবং সামান্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
পড়ুন: এবছর শীতের সাথে ভাঙ্গবে গরমের সব রেকর্ড
দেখুন: গায়ে গরম পানি ঢালল অধ্যক্ষের স্ত্রী, লাফিয়ে প্রাণ রক্ষা |
ইম/