সৌদি আরব সফরে তেল নির্ভরতা কাটিয়ে ভবিষ্যৎ অর্থনীতিকে নির্ভরযোগ্য করে তুলতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন প্রযুক্তি সকলের সামনে নিয়ে এসেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম আন্তর্জাতিক সফরে খালি হাতে যাননি। নিজ দেশের প্রযুক্তি বিশ্বের কাছে বিক্রির মাধ্যমে নিজ দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্য হতে পারে তার এই সফরের উদ্দেশ্য।
সৌদি আরবে ট্রাম্পের এই নতুন প্রযুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছে তুলে ধরার সময় তার সঙ্গে ছিলেন আমেরিকার সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলোর প্রায় তিন ডজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও, যার মধ্যে বিগ টেক জায়ান্টদের প্রতিনিধি ছিলেন। সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে মোট ৬০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এর এমন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন যা বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অত্যন্ত মূল্যবান। তার দাবি এআই এর এই চিপ মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম অবকাঠামোর প্রযুক্তি প্রকল্পগুলোতে ব্যবহার করলে অঞ্চলটির তেল-নির্ভরতা কাটিয়ে ভবিষ্যৎ অর্থনীতিকে নির্ভরযোগ্য করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই চুক্তিগুলো মার্কিন AI প্রযুক্তির গুরুত্বকে তুলে ধরেছে, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য একটি প্রধান কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। তিনি নিজেকে একজন সফল চুক্তিবাজ ও বিশ্বনেতা হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ, বিশেষত সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছেন।
মঙ্গলবার ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরের সময় তাঁর সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন ইলন মাস্ক, ওপেনএআই’র স্যাম অল্টম্যান, এনভিডিয়ার জেনসেন হুয়াং এবং আইবিএমের অর্জিন্দ কৃষ্ণ।
এর আগে প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ট্রাম্প ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্ট এর সাংবাদিক জামাল খাশোগজিকে হত্যার পর সৌদি আরবকে “একঘরে” রাষ্ট্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পকে রাজার বেগুনি কার্পেটে স্বাগত জানানো সেই ক্রাউন প্রিন্সই সাংবাদিক খাশোগজিকে হত্যা ও বন্দির আদেশ দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের উপসাগরীয় অঞ্চল সফরের কয়েক দিন আগে ট্রাম্প প্রশাসন বাইডেন আমলের কিছু বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পরিকল্পনা ঘোষণা করে, যেগুলো AI প্রযুক্তি শত্রু শক্তির হাতে পড়া আটকাতে করা হয়েছিল। এআই প্রযুক্তি এমন কোনো দেশের কাছে প্রদানে বিধিনিষেধ ছিলো, যারা এই প্রযুক্তিকে আরো উন্নত করে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে বলে আশংকা ছিলো।
যদিও সৌদি আরব বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল রপ্তানিকারক দেশ, তবে প্রতিবেশী দেশগুলোসহ সৌদি আরব এখন জ্বালানি বিক্রির আয় দিয়ে অর্থনীতিকে বহুমুখীকরণে বেশি মনোযোগী হচ্ছে। সৌদি আরব “গিগা-প্রকল্প” নামে একাধিক উদ্যোগ ঘোষণা করেছে, যা দেশটির ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু, যার লক্ষ্য দেশকে আধুনিকীকরণ এবং তেলের ওপর নির্ভরতা কমানো।
এনএ/