ম্যাচজুড়ে মুহুর্মুহু আক্রমণ শাণাল তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে গড়া ব্রাজিল। তাদের আক্রমণভাগের সামনে পুরো ম্যাচে কোণঠাসা হয়ে রইল দক্ষিণ কোরিয়া। তাতে দাপুটে ফুটবল খেলে, গোল উৎসব করে, ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতিপর্ব শুরু করল কার্লো আনচেলত্তির দল।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সিউলের ওয়ার্ল্ড কাপ স্টেডিয়ামে এশিয়া সফরের প্রথম ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিক দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল। বড় জয়ের পথে দুটি করে গোল করেছেন এস্তেভোঁ ও রদ্রিগো। একবার জালের দেখা পেয়েছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
এর আগে, ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে সবশেষ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে দেখা হয়েছিল ব্রাজিলের। সেই ম্যাচেও অসাধারণ পারফরম্যান্সে ৪-১ গোলে জিতেছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। যদিও পরের ম্যাচেই হেরে কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েছিল দলটি।
এদিন শুরুর একাদশে চার ডিফেন্ডার, দুই মিডফিল্ডার ও চার ফরোয়ার্ড নিয়ে নামে ব্রাজিল। ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিকদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে তারা। প্রথম ১০ মিনিটে দূর থেকে নেয়া রদ্রিগো ও ভিনিসিয়ুসের একটি করে শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
অবশেষে ত্রয়োদশ মিনিটে চমৎকার গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ডি-বক্সে দারুণ রক্ষণচেরা পাস বাড়ান মিডফিল্ডার ব্রুনো গিমারাইস। চোখের পলকে ছুটে গিয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে ডান পায়ের শটে বল জালে পাঠান তরুণ ফরোয়ার্ড এস্তেভোঁ উইলিয়াম।
কিছুক্ষণের মধ্যে হেডে আবার জালে বল পাঠান কাসেমিরো। তবে নিজেই অফসাইডে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক, তাতে গোল পাওয়া হইনি তার। এরপর একের পর এক আক্রমণে একচেটিয়া চাপ ধরে রেখে খেলতে থাকে ব্রাজিল। দারুণ সব সুযোগও পাচ্ছিল তারা; তবে ব্যবধান বাড়ছিল না।
২৭তম মিনিটে মাথেউস কুইয়ার পাস ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে পেয়ে অনায়াসে ফ্লিক করতে পারতেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র; কিন্তু ব্যাকহিল করে বল হারান রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটে খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন ডিফেন্ডার এডার মিলিতাও।
৪১তম মিনিটে আরেকটি দর্শনীয় গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয় ব্রাজিলের। ডি-বক্সের বাঁ দিক থেকে কাটব্যাক করেন ভিনিসিয়ুস, প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দিতে রদ্রিগো ডামি করে ছেড়ে দেন বল, এরপর কাসেমিরোর পাস ধরে দুই ডিফেন্ডারের পাশ দিয়ে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে আরও দুটি গোলও পেয়ে যায় ব্রাজিল। ৪৭তম মিনিটে ডি-বক্সের বাম দিকে ডিফেন্ডার কিম মিন-জে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে এস্তেভোর পায়ে মেরে বসেন। আর বল ধরে ক্ষীপ্রতায় এগিয়ে বাঁ পায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন চেলসি ফরোয়ার্ড।
ওই ধাক্কা সামলে নেওয়ার আগেই চতুর্থ গোলটি হজম করে স্বাগতিকরা। ভিনিসিয়ুসের পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন রদ্রিগো। ৬৫তম মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে কিম জিন। ব্রাজিল গোলররক্ষক বেন্তো ঝাঁপিয়ে সেই শটটি ঠেকিয়ে দেন।
৭৭তম মিনিটে স্কোরলাইনে নিজের নাম তোলেন ভিনিসিয়ুস। প্রতি-আক্রমণে মাথেউস কুইয়ার পাস মাঝমাঠে ধরে দ্রুত গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে ছুটে যান রিয়াল মাদ্রিদ তারকা, ডি-বক্সে ঢুকে গতি কমিয়ে দেন তিনি, ছুটে আসা ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ঠাণ্ডা মাথার শটে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে।
এশিয়া সফরের পরের ম্যাচ আগামী মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় টোকিওর আজিনোমটো স্টেডিয়ামে খেলবে জাপানের বিপক্ষে।
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

