প্রায় সাত বছর আগে পৃথিবী ছেড়ে গেছেন দাদা হাজী আব্দুর রহিম মিয়া। কিন্তু তার রেখে যাওয়া এক অদ্ভুত, স্নেহভরা ইচ্ছে যেন আজও ভেসে বেড়ায় পরিবারের বাতাসে—
“নাতির বিয়েতে তাকে হাতির পিঠে চড়িয়ে আনবো!”
দাদার সেই অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণেই বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে আখাউড়া পৌরশহরের দুর্গাপুর এলাকায় দেখা গেলো এক রাজকীয় দৃশ্য। সৌদি প্রবাসী ইসমাইল হোসেন রনি, হাতে রেশমি ছাতা, পরনে রাজা-বাদশাহদের মতো সাজ—চড়েছেন এক হাতির পিঠে! সঙ্গে বরযাত্রী আর চারদিক জুড়ে উচ্ছ্বাসের ঢেউ।
রনি উপজেলার আজমপুর কৌড়াতলী গ্রামের সাচ্চু মিয়ার ছেলে। সাত বছর আগে দাদা রহিম মিয়া মারা যাওয়ার আগে প্রায়ই বলতেন—“আমার নাতির বিয়েতে হাতি আনবো, রাজকীয়ভাবে বিয়ে দেব।” সেই কথাটিই যেন হয়ে উঠেছিল পরিবারের প্রতিজ্ঞা।
পিতার সেই স্বপ্ন পূরণে সাচ্চু মিয়া দূর শ্রীমঙ্গল থেকে ৪০ হাজার টাকায় হাতি ভাড়া করে আনেন। সাজিয়ে তোলেন রাজদরবারের মতো—ঘন্টা, ফুল, আলোর মালা, আর রাজকীয় পোশাকে বর রনি।
বিয়ের শোভাযাত্রা যখন বের হয়, তখন যেন ছোট্ট পুরো এলাকা থমকে দাঁড়ায়।
রাস্তার দুই পাশে মানুষের ভিড়, কেউ বিস্ময়ে তাকিয়ে, কেউ বা মোবাইল হাতে দৃশ্যটি বন্দি করছেন। ছোট ছোট শিশুরা হাতির পেছনে ছুটে মেতে ওঠে আনন্দে।
বর রনি হাসিমুখে বলেন,
“দাদুর স্বপ্নই আজ পূরণ করতে পেরেছি। রাজকীয়ভাবে বিয়ে করা আমার নয়—দাদার ইচ্ছে ছিল এটা। আজ মনে হচ্ছে, দাদু কোথাও বসে হাসছেন।”
বরযাত্রী ও স্থানীয় বিএনপি নেতা লুৎফুর রহমান বলেন,
“আগে রাজা-বাদশাহদের সন্তানরা হাতি ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যেতেন। এখন সেই দৃশ্য চোখে দেখা বিরল—এই ডিজিটাল যুগে এমন আয়োজন সত্যিই মনোমুগ্ধকর।”
এ যেন শুধু এক বিয়ের আয়োজন নয়—এ ছিল এক নাতির ভালোবাসায় দাদার স্বপ্নপূরণের গল্প, যেখানে ঐতিহ্য আর আবেগ মিলেমিশে গড়ে তুলেছে এক অনন্য মুহূর্ত।
পড়ুন: ঝিনাইদহে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে পুলিশে দিলো জনতা
দেখুন: টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি: গ্রে*প্তার ১, কিছু মালামাল উদ্ধার
ইম/


