বন্যায় দেশের ১১ জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯ পরিবার। আর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৫২ লাখ মানুষ। জানিয়েছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব কামরুল হাসান। অনেকেই দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তবে চাহিদার তুলনায় ত্রাণ অপ্রতুল। ভারী বর্ষনে ও জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবন এলাকা।
দুদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়া এবং পাহাড়ি ঢলের পরিমাণ কমায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও মীরসরাইয়ে নদী ও খালের পানি কমতে শুরু করেছে। এতে করে ওইসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে হাটহাজারীর অনেক এলাকায় এখনো পানি রয়েছে।
উজান থেকে নামা হালদা নদীর ঢলে পূর্ব সুয়াবিলে বাড়িঘর দুমড়ে মুচড়ে গেছে। একইসাথে চট্টগ্রাম–খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক, ফটিকছড়ি–বারৈয়ারঢালা সড়কে দেখা যাচ্ছে ভাঙন।
ভারী বর্ষণে ডুবে গেছে বাগেরহাটের পৌর এলাকাসহ অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। গত ২৪ ঘণ্টার জেলায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে মোংলা আবহওয়া অফিস। জোয়ারের পানিতে চার ফিট পানির নিচে প্লাবিত হচ্ছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন।
এদিকে নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালীসহ বিভিন্নভাবে ঢুকছে লক্ষ্মীপুরে। দীর্ঘ জলবদ্ধতায় ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট ও বিশুদ্ধ পানির অভাব। এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৯ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে।
কুমিল্লার বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও গোমতীর বাঁধ ভাঙা পানিতে বেড়েছে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়ার পানি। বেড়েছে মানুষের দূর্ভোগ। গোমতীর পানি বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপরে বইছে।
নৌকা ও ট্রলার নেই তাই দূর্গত মানুষের কাছে পর্যাপ্ত ত্রান পৌছাচ্ছে না। জেলায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি। ৭শ ২৪ টি আশ্রয় কেন্দ্রে অর্ধলক্ষের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
নোয়াখালীর ৮টি উপজেলায় দুই লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত। মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুর খাদ্য সংকটও চরম আকার ধারণ করছে।
ভয়াবহ বন্যার কারণে মৌলভীবাজার উপজেলার পাঁচ পৌরসভা ও ৪৮টি ইউনিয়নের ৮২১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দুই লক্ষ ৫০ হাজার ৮৬৪ জন মানুষ পানিবন্দি। এখানেও আছে খাবার ও পানির সংকট।
জেলার ৭টি উপজেলার হাওর ও নদী তীরের মানুষ এ নিয়ে দুবার বন্যায় ভাসলেন।
উজানে ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টির কারণে বন্যায় দেশের ১২ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে।