ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম গত ২৭ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমকে পাঁচ বছর ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই মামলায় তার মা আয়েশা আক্তারকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতের রায়ে, শামীমকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া, জি কে শামীমের অবৈধ সম্পদ হিসেবে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে এ বিষয়ে খালাস দেওয়া হয়েছে। তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

এই মামলার তদন্তে জানা যায়, জি কে শামীম ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া গেলেও, দুদক ওই সম্পদের বৈধ উৎস খুঁজে পায়নি। শামীমের বাসা থেকে উদ্ধার করা নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা, এবং তার ও তার মায়ের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদার, গাড়ি ও শেয়ারের মাধ্যমে ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়, যেগুলোর বৈধ উৎস প্রমাণিত হয়নি।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নিকেতনের বাসা থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই গ্রেপ্তারের পর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলছিল, যা সারা দেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। এ মামলার বিচার শুরু হয় ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর, যখন আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়।
দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, “আমরা সন্তুষ্ট যে আদালত দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের অধীনে শামীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাজা দিয়েছেন। আমরা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছিলাম, তবে আদালত তা খালাস দিয়েছে।”
এদিকে, রায়ের পর এ বিষয়ে কমিশন আপিল করার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে।
পড়ুন: ঝিনাইদহে খ্রিষ্টান মিশরীয় চার্চে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
দেখুন: দুর্নীতি, লুটপাটে অর্থনীতি এখন শূন্য: মির্জা ফখরুল |
ইম/