দেশ ছেড়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। সাবেক এই আইজিপির নামে-বেনামে নতুন নতুন সম্পদের তথ্য পাচ্ছে দুদক। এসব জমির প্রায় সবই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের। ভয় দেখিয়ে, জোর করে এবং নানা কৌশলে তাঁদের কাছ থেকে জমিগুলো কেনার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, বেনজীর আহমেদ ব্যক্তিগত অপরাধ করে থাকলে তার দায় পুলিশ নেবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ছিলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য প্রকাশের পর একা হয়ে পড়েছেন তিনি। চলে গেছেন পরিচিত গণ্ডির বাইরে। তবে বেনজীরের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গেছে। বেনজীর এখন দেশে নেই। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের রেকর্ডে উল্লেখ আছে, গত ৪ মে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে ছিলেন।
এদিকে বেনজীর পরিবারের সম্পদের খোঁজ অব্যাহত রেখেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান টিম। দুদকের অনুসন্ধানে বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে এখন পর্যন্ত ৬২১ বিঘা জমির খোঁজ পাওয়া গেছে, যার ৫৯৮ বিঘা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ও মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। বেনজীর আহমেদ সেখানে সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক নামে একটি রিসোর্ট করেছেন।
ওই এলাকার গ্রামগুলো হিন্দু অধ্যুষিত। অভিযোগ উঠেছে, হিন্দু পরিবারগুলোর কাছ থেকে জমি কিনতে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োজিত রেখেছিলেন বেনজীর। তাঁরা জমি বিক্রি করতে না চাইলে, তাঁদের ভয় দেখিয়ে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদের দেশ ত্যাগের বিষয়ে জানেনা সরকার। তিনি ব্যক্তিগত অপরাধ করে থাকলে তার দায় পুলিশ নেবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আগামী ৬ জুন বেনজীর ও ৯ জুন তার পরিবারের সদস্যদের দুদকে সশরীরে হাজির হয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করার কথা। বেনজীর আহমেদ পরিবারসহ আত্মগোপনে থাকলে সেটি কিভাবে সম্ভব?
সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও তারা আইনজীবীর মাধ্যমেও তাদের বক্তব্য ও তথ্য-উপাত্ত পাঠাতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তারা যেটাই করেন, ৬ জুনের পর দুদক আইনের ২৬(১) ধারা অনুযায়ী বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করা হতে পারে।