০৮/১১/২০২৫, ৯:১০ পূর্বাহ্ণ
26 C
Dhaka
০৮/১১/২০২৫, ৯:১০ পূর্বাহ্ণ
বিজ্ঞাপন

দেশে বছরে খাবার অপচয় ২ কোটি ১০ লাখ টন

বাংলাদেশে প্রতি বছর কৃষকের খামার থেকে শুরু করে ভোক্তার টেবিল পর্যন্ত যাত্রাপথে প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টন খাদ্য অপচয় ও নষ্ট হয় বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন। ‘খাদ্যের অপচয় রোধের মাধ্যমে টেকসই খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

এসময় ফরিদা আখতার বলেন, ‘কৃষকেরা খাদ্যপণ্য উৎপাদন করলেও সঠিক সংরক্ষণ, ন্যায্য দাম নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে বিপুল পরিমাণ খাদ্য অপচয় হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখনও ১ কোটি ৫৫ লাখ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এবং এই পরিস্থিতি ২০২৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। অথচ একই সময়ে দেশের অন্য অংশে অতিভোজনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় খাদ্য নষ্ট হওয়াকে তিনি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন।

সরকার একদিকে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত ও উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা করছে, অন্যদিকে ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কৃষকেরা দুধ, আলুসহ নানা পণ্য নষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। চান্দিনায় কৃষকেরা দুধ ফেলেছেন এমন উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পাইকাররা ন্যায্য দাম দিতে রাজি না হওয়ায় কৃষকেরা বাধ্য হয়ে দুধ ফেলে দিয়েছেন। একই চিত্র আলু ক্ষেত্রেও দেখা যায়।’

মৎস্যসম্পদের অপচয় নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফরিদা আখতার। তিনি জানান, ইলিশসহ নানা মাছ ধরার সময় যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ে, তার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। এর পেছনে রয়েছে স্থানীয় বাজারে চাহিদার অভাব, মাছ না চেনা, অথবা অবৈধ জাল ব্যবহারে অপ্রয়োজনীয় সামুদ্রিক প্রাণী ধরা পড়া। তিনি বলেন, “জেলেদের সচেতন করা গেলে এবং এসব মাছের রপ্তানি বাজার খুঁজে পেলে তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতেন।”

সম্মেলনের সূচনা বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো হলেও অপুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এখনও চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। খাদ্যের অপচয় ও বণ্টনের বৈষম্য এই সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করছে।’

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ডেনমার্ক দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আন্দের্স কার্লসেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ দিয়া সানু, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (WFP) ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জেসি উড এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইয়াসিন প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

পড়ুন : নোয়াখালীতে পানির তীব্র সংকট, জিও হাইড্রোলজিক্যাল সার্ভের দাবি

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

বিশেষ প্রতিবেদন