রাজধানীর ধানমন্ডি ১৫ নম্বর রোডের একটি বাসায় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে একে এম আব্দুর রশিদ (৮৫) নামের একজন বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে ধানমন্ডি-১৫ নম্বর এলাকায় পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ঘটনাটি ঘটে।
ভোর রাতের দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ধানমন্ডির ওই বাড়িতে যা হয়েছিলো
আব্দুর রশিদকে ধানমন্ডি থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার বাড়ির ভাড়াটিয়া বাঁধন জানান, নিহত আব্দুর রশিদ লন্ডন প্রবাসী। গত সেপ্টেম্বরে ঢাকায় আসেন। তার স্ত্রী সুফিয়া রশিদও একজন চিকিৎসক। রাতের দিকে অস্ত্রসহ ডাকাত দল তার রুমে ঢুকে যায়। পরে দুজনকে জিম্মি করে ডাকাত দল। এতে বাধা দিলে আব্দুর রশিদ ও তার স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে ডাকাতরা।
হাসপাতালে নিয়ে আসা ধানমন্ডির ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া সাইদুর রহমান বাঁধন জানান, একেএম আব্দুর রশিদ ওই বাসার মালিক। আব্দুর রশিদ ও তার স্ত্রী যুক্তরাজ্য প্রবাসী। গত সেপ্টেম্বরে দেশে আসেন তারা। রাতে হঠাৎ চিৎকারে ঘুম ভাঙে। পরে তাদের রুমে গিয়ে দেখি আব্দুর রশিদ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং তার স্ত্রী মাথায় পানি ঢালছেন। তাকে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে মারা যান তিনি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক। তিনি বলেন, নিহতের মৃতদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।
হাজারীবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, নিজস্ব বাড়ির দোতলায় থাকতেন আব্দুর রশিদ ও তার স্ত্রী। তারা দুই জনই ডাক্তার। গতকাল রাত ৩টার দিকে আব্দুল রশিদ দরজা খোলা রেখে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ছিলেন। তখন চুরির উদ্দেশ্যে বাসায় ঢুকে পড়ে তিন যুবক। পরে তাদের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর ধস্তাদস্তি হয়। এক পর্যায়ে চোররা আব্দুর রশিদকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
দেখুন: প্রকাশ্যে ডাকাতি, নারীসহ হাতেনাতে ধরা
ওসি আরও বলেন, ওই বাড়ি ও আশেপাশে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুজেটে তিন জনকে দেখা গেছে। তবে ভিকটিমের বাসা থেকে কোনও কিছু খোয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা যাচ্ছে। আসলে ঘটনাটা কি চুরির, নাকি পূর্বপরিল্পিত কোনও ঘটনা আছে– সেব্যাপারেও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখতে পাওয়া ওই তিন ব্যক্তিকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
আব্দুর রশিদের স্ত্রী ভালো আছে, তার শরীরে কোনও আঘাতে চিহ্ন নেই এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাননি বলেও জানান ওসি।