দিন যত যাচ্ছে ততই ধ্বংসের পথে এগুচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। পতনের ধারাবাহিকতায় নি:স্ব হয়ে ইতিমধ্যে বাজার ছেড়েছেন অনেক বিনিয়োগকারীরা। তবে যারা সর্বশান্ত হয়ে রাস্তায় নেমেছেন তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কূট কৌশলের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। যেসব বিনিয়োগকারী মতিঝিলে মানববন্ধন করার পাশাপাশি আগারগাঁও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা আওয়ামীপন্থী এবং যারা কারসাজির কারণে শাস্তির সম্মুখীন হয়েছেন তাদের দোসর” এই অভিযোগ এনে তাদের মানববন্ধন করতে দেওয়া হয়নি। যদিও আজ বিএসইসি ভবনের রাস্তার বিপরীত পাশে অল্পকিছু বিনিয়োগকারী মানববন্ধন করেছিলেন। কিন্তু তাদের কোন আওয়াজ কানে নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারবাজার পতনের দায়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদের পদত্যাগ দাবি করে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
এদিকে বাজারের ধারাবাহিক পতনরোধে বিএসইসির নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের নানা উদ্যোগ না নেওয়া বিনিয়োগকারীদের নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বলছেন, এভাবে শেয়ারবাজার চলতে পারে না। শেয়ারবাজারে অনিয়ম, দুর্নীতি রোধে বিএসইসি প্রশংসনীয় কাজ করছে। কিন্তু বিপরীতে শেয়ারবাজারের পতন রোধে বা বিনিয়োগকারীদের বাঁচাতে দৃশ্যত কোন কাজ করছে না। শেয়ারবাজার সংস্কারের নামে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি শেষ করে দেওয়া হয়েছে। তাই সংস্কারের নামে যেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নি:শেষ করে না দেওয়া হয় সেজন্য বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগিরা।

জানা যায়, আজ ৬ অক্টোবর ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১.৫৩ শতাংশ বা ৮৩.৮১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ৫ হাজার ৩৭৮.৭৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩০.৪১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১ হাজার ১৯০.৮৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২৬.৫৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১ হাজার ৯৬৪.৩১ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯২ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮০ টির, কমেছে ১৫৬ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬ টির। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে আজ ৪৫.৯২ শতাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে।
সারাদিনে ডিএসইতে ১৪ কোটি ২০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮৫ টি শেয়ার ১ লাখ ২৯ হাজার ২৯২ বার হাতবদল হয়েছে। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৩৬৮ কোটি ১৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
গত কার্যদিবসে অর্থাৎ ৩ অক্টোবর ডিএসই’র ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ০.১৬ শতাংশ বা ৮.৫৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করেছিল ৫ হাজার ৪৬২.৫৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১.৫৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১ হাজার ২২১.২৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ২.৮৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ১ হাজার ৯৯০.৮৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বৃদ্ধি পায় ২০৯ টির, কমে ১৩৮ টির এবং অপরিবর্তিত রয় ৫০ টির। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে গত কার্যদিবসে ৫২.৬৪ শতাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পায়। সারাদিনে ডিএসইতে ১২ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার ৭৩২ টি শেয়ার ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৫৯ বার হাতবদল হয়। আর দিন শেষে লেনদেন হয় ৩১৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
সে হিসেবে আজ লেনদেন বেড়েছে ৫২ কোটি ৬২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।
এদিকে আজ দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএএসপিআই ০.৬৮ শতাংশ বা ১০৪.৫২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করেছে ১৫ হাজার ১৬৭.২৫ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২০১ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০০ টির, কমেছে ৮১ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০ টির। আজ দিন শেষে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৬৪ লাখ ১১ হাজার ৭৪৭ টাকা।