১৯৮ তম ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। মুসল্লিদের জন্য এবছর পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সকাল ১০টায় এ ময়দায়ে শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে ইমামতি করবেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রোডে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ১৯৮তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে।’
ঈদ স্পেশাল ট্রেনের ব্যাপারে ডিসি বলেন, ‘ঈদ স্পেশাল-১১ ট্রেনটি ভৈরব থেকে ছাড়বে সকাল ৬টায় এবং কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ৮টায়। আর শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১২ ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায় যা ভৈরব পৌঁছাবে দুপুর ২টায়। এছাড়া শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১৩ ট্রেনটি ময়মনসিংহ থেকে ছাড়বে সকাল পৌনে ৬টায় ও কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল সাড়ে ৮টায়। অন্যদিকে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল-১৪ ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাবে দুপুর ১২টায় এবং ময়মনসিংহে পৌঁছাবে বেলা ৩টায়।’

জায়নামাজ এবং মোবাইল ছাড়া কোনকিছু নিয়ে মাঠে প্রবেশ না করার জন্য মুসুল্লিদের উৎসাহিত করছে প্রশাসন।
কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘ঈদ জামাতকে ঘিরে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করতে ৬ টি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি ড্রোন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এ ছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।’ আশা করি, নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে মুসুল্লিরা নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরতে পারবেন।’
নরসুন্দা নদীর তীরে দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত হতো এই ঈদগাহ ময়দানে। এখানে একসঙ্গে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। শোলাকিয়া ময়দানের আয়তন সাত একর। পুরো ঈদগাহ ময়দানের চারপাশে উঁচু দেয়াল দিয়ে বাউন্ডারি করা হয়েছে। তবে মুসল্লিরা যেন মাঠের সবদিক দিয়ে প্রবেশ ও বের হতে পারেন, সেজন্য দেয়ালের মধ্যে ফাঁকা রাখা হয়েছে।

শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাতের জন্য আড়াই শতাধিক সারি হয়। প্রতিটি সারিতে প্রায় ৬৫০ থেকে ৭০০ জন মুসল্লি দাঁড়াতে পারেন। সব মিলিয়ে শুধু মাঠের ভেতরেই প্রায় ২ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
তবে মাঠের সমপরিমাণ মুসল্লি মাঠের পাশের সড়ক ও খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করেন বলে জানান তিনি। সব মিলিয়ে এই ময়দানে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। এলকাবাসীর তথ্যানুযায়ী, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে একসঙ্গে প্রায় সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। আর তখন থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, যা পরে ‘শোলাকিয়া’ নামে পরিচিতি পায়।
এনএ/