১৪/০৬/২০২৫, ১৪:২৩ অপরাহ্ণ
35.3 C
Dhaka
১৪/০৬/২০২৫, ১৪:২৩ অপরাহ্ণ

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন: নির্বাচন এগিয়ে আসছে, সহজ নয় সংস্কারের পথ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণা অনুযায়ী, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে এ নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলসহ অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করলেও বর্তমান সরকারের উপদেষ্টারা বারবার বলছেন প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই হবে নির্বাচন। তবে, এর আগে রাষ্ট্রব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার করে যেতে চেয়েছে সরকার। এজন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। তবে, অন্তর্বর্তী সরকারের কাঙ্খিত সংস্কারের সে পথ সহজ হচ্ছে না মোটেই। 

গতকাল শুক্রবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এমনই এক বিশ্লেষণ দিয়েছে দ্য ইকোনমিস্ট। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ড. ইউনূস প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ৯ মাস পার হলেও সরকারের প্রতিশ্রুত সংস্কার কিংবা জুলাই গণহত্যার বিচার এখনো উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেনি।

এ নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১৬ বছরের একটানা ‘ভূমিকম্পের’ মতো আতঙ্কের রাজনৈতিক শাসনের পর বাংলাদেশের সামনে এখন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। যা কিছু ধ্বংস হয়েছে, তা মেরামত করার চেষ্টায় আছি আমরা। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা আশাবাদী। তবে, এসব বাস্তবায়ন মোটেও সহজ হচ্ছে না।

শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতির চিত্র সামনে আসার পর প্রকাশিত এক শ্বেতপত্রে দাবি করা হয় যে প্রতি বছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও গণহত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা চললেও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নির্বাচন, বিচারব্যবস্থা ও সংবিধান ইত্যাদি নিয়ে একাধিক সংস্কার কমিশন গঠন করেন ড. ইউনূস। এসব কমিশনে নাগরিক সমাজ ও শিক্ষাজগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যুক্ত রয়েছেন। কমিশনগুলোর সুপারিশ বিশ্লেষণ করতে গঠিত হয় ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’। এ পর্যন্ত তারা ১৬৬টি সুপারিশ সংগ্রহ করেছে ও ৩৫টি রাজনৈতিক দলের মতামতও নেওয়া হয়েছে।

এই কমিশনের কাজ হলো- জুলাই মাসের মধ্যে একটি ‘চার্টার অব কনসেনসাস’ প্রণয়ন করা, যা আগামী নির্বাচন ও ‘নতুন বাংলাদেশ’র রূপরেখা নির্ধারণ করবে।

তবে, ঐকমত্য গড়ে তোলা সহজ হচ্ছে না। কেউ কেউ মনে করছেন, টেক্সটাইল বা শিক্ষা খাতে কোনো কমিশন না থাকা ভুল হয়েছে। সবচেয়ে বিতর্কিত হয়ে উঠেছে নারীদের অধিকার বিষয়ক কমিশনের সুপারিশ, যা ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে। এর জেরে কট্টর ইসলামপন্থি দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি ও ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা আনতে সক্ষম হলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখনও দুর্বল। জনগণের বড় অংশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার কথা বলছে। রাজপথে প্রতিবাদ প্রতিদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে।

সরকার বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে, আওয়ামী লীগের সমর্থন এখনও বিদ্যমান। অনেকে মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকার জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হলে দলটি পুনরায় সংঘটিত হতে পারে।

বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের পথে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, যা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না বলে অনেকের মতামত।

এনএ/

দেখুন: নির্বাচন হবে,তবে হ্যাঁ-না ভোটের? 

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন