০৮/১১/২০২৫, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ
26 C
Dhaka
০৮/১১/২০২৫, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ
বিজ্ঞাপন

নেপালের সংকট বিশ্বের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ

দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রথমে শ্রীলঙ্কা, গত বছর বাংলাদেশ আর এ বছর নেপালে অরাজকতা, রাজনৈতিক পালাবদল, সরকার পতনের ঘটনা বিশ্বজুড়েই কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক এই অস্থিরতা দক্ষিণ এশিয়া তথা বিশ্বপরিমণ্ডলে কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়েও চলছে বিশ্লেষণ। বিশেষ করে সর্বশেষ নেপাল দুই বৈশ্বিক পরাশক্তি ভারত ও চীনের প্রতিবেশী হওয়ায় আলোচনা আরও বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে আঞ্চলিক অর্থনীতি, বাণিজ্যিক ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার আলজাজিরা বিষয়টি নিয়ে একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রতিবেশী চীন, ভারত, পাকিস্তানসহ সবাই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। এর কারণ নেপালের ভৌগোলিক অবস্থান এবং আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার দীর্ঘ ইতিহাস। গত রোববার নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি তরুণ বিক্ষোভকারীদের উপহাস করে বলেছিলেন, নিজেদের ‘জেন-জি’ পরিচয় দেওয়া বিক্ষোভকারীরা মনে করছেন, তারা যা খুশি দাবি করতে পারে। এর মাত্র ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে অলি পদত্যাগে বাধ্য হন। গত কয়েক দিনে নেপালের নাটকীয় ঘটনাগুলো দেশটিকে রাজনৈতিক পরিবর্তনের এক নতুন কেন্দ্রে পরিণত করেছে। ঠিক যেমন ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশেও একই ধরনের তরুণ-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন সরকার উৎখাত করেছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেপালের এই রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিণতি শুধু তিন কোটি মানুষের এই দেশটির জন্যই নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর অঞ্চল এবং অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও সতর্কবার্তা। 

তবে এটি নেপালের ইতিহাসে ব্যাপক ছাত্র অসন্তোষের ঘটনা কিন্তু এটিই প্রথম নয়। দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে বরং ছাত্র আন্দোলন, রাজনীতিতে রাজপ্রাসাদের হস্তক্ষেপ এবং সহিংসতার বিরাট এক চক্র রয়েছে। যার মধ্যে এক দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধও অন্তর্ভুক্ত। খেয়াল রাখতে হবে, হিমালয়ের পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রায় ৮৮৫ কিলোমিটার এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার বিস্তৃত নেপাল দুটি আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে অবস্থিত। এর উত্তরে চীন এবং দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে ভারত। তবে নেপাল ঐতিহাসিকভাবে ভারতের ঘনিষ্ঠ হলেও, তাদের বৈদেশিক সম্পর্ক অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। অলিকে ব্যাপকভাবে জীনঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হতো। এখন তাঁর অপসারণের পর কাঠমান্ডুতে ভারতের প্রভাব ফিরে আসে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ভারতীয় সমাজবিজ্ঞানী লোকরঞ্জন পারাজৌলি মনে করছেন, নেপালের পরবর্তী শাসক সম্ভবত এমন কেউ হতে পারেন, যিনি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন। সেই ব্যক্তি কে হবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তিনি এমন একজন হতে পারেন, যাকে সেনাবাহিনী বিশ্বাস করতে বা যার ওপর নির্ভর করতে পারে। এরই মধ্যে নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে সমর্থন দিয়েছেন জেন-জি প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে লোকরঞ্জন ত্রিপাঠি বলেন, সুশীল সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী এবং তাঁর পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। কার্কির রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক আনুগত্য এখনও অস্পষ্ট। আবার কাঠমান্ডুর মেয়র র‍্যাপ শিল্পী বালেন্দ্র শাহর নামও অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে বলছেন কেউ কেউ। কাঠমান্ডুর একজন দীর্ঘদিনের মানবাধিকারকর্মী বলেন, নতুন নেতা যেই হোক না কেন, ভারত এবং চীন উভয়েই নেপালে স্থিতিশীলতা এবং এমন একটি সরকার চাইবে, যা তাদের স্বার্থকে সুরক্ষিত করবে। কোনো প্রতিবেশীই চায় না, অন্যজন নেপালে অতিরিক্ত প্রভাব বিস্তার করুক।

আবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সংস্থা হিলিক্সের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ আলি হাসান মনে করেন, অলির পতন কাঠমান্ডুতে বেইজিংয়ের জন্য একটি ধাক্কা এবং দিল্লির জন্য একটি সম্ভাব্য সুযোগ হতে পারে।

পড়ুন: ইসরায়েল আরও বেপরোয়া, ৭২ ঘণ্টায় ছয় দেশে হামলা

দেখুন: এবার ‘হারিকেন অভিযানে’র হু/ম/কি ইসরায়েলের 

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

বিশেষ প্রতিবেদন