২১/০৫/২০২৫, ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ
25 C
Dhaka
২১/০৫/২০২৫, ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ

নোয়াখালীতে পানির তীব্র সংকট, জিও হাইড্রোলজিক্যাল সার্ভের দাবি

নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচর ও সদরের দক্ষিণাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। খাল, বিল, পুকুরে নেই পানি। গভীর-অগভীর নলকূপেও পানি মিলছেনা। খাবার পানি, গোসল এবং গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহারের পানির জন্য রীতিমতো হাহকার চলছে। অপরিকল্পিতভাবে নলকূপ স্থাপন করে ভূগর্ভস্থ পানির যথেচ্ছ ব্যবহার এবং খাল, বিলসহ ভূ-উপরিভাগের প্রাকৃতিক জলাধারগুলোর বেহাল দশার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জিও হাইড্রোলজিক্যাল সার্ভে করে দ্রুত সমস্যার সমাধানের দাবি সংশ্লিষ্টদের।


স্থানীয় বাসিন্দা নারী-পুরুষ জানিয়েছেন, এক সময়ের প্রাকৃতিক পানির আধার নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচর ও সদর দক্ষিাঞ্চলের মানুষ গত দুই মাস থেকে পানির অভাবে চরম দুর্বিসহ জীবন কাটচ্ছেন। গ্রীষ্মের দাপদাহ বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে পানির এ সংকট আরো তীব্র হচ্ছে। দিনের পর দিন ভূগর্ভস্থ পানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে গৃহস্থালী কাজে ব্যবহারের জন্য এখন নলকূপ চেপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আশপাশের খাল, বিল, পুকুর জলাশয়গুলোও পানিশূণ্য হয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে খাবার পানির জন্য দূর দূরান্তে ছুটতে হচ্ছে অথবা বাজারে ক্রয়কৃত পানির ওপর ভরসা করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। কয়েক কিলোমিটার পর কোন পুকুরে যেটুকু পানি আছে, তা দিয়ে আশপাশের অনেক পরিবার গোসল এবং গৃহস্থালী কাজ সারতে হচ্ছে। যার কারণে ডায়রিয়া এবং চর্মরোগসহ পানিবাহিত নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জেলার সুবর্ণচর ও সদর দক্ষিণাঞ্চলে অপরিকল্পিত কৃষি, বিশেষ করে বোর ইরি ধান চাষাবাদের কারণে সেচ পাম্পের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থের পানি তুলে নেওয়ার কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপরেশনের (বিএডিসি) অনুমোদনের বাহিরে ৩ হাজারেরও বেশি সেচ যন্ত্র স্থাপন করে কৃষি কাজে ভূগর্ভস্থের পানি ব্যবহার করায় পানির এমন তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।


পরিকল্পিত কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে পানি সংকটের স্থায়ীয় সমাধানে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানালেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালীর অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) গোলাম ছামদানী এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ খালিদুজ্জামান।


পানির সংকট মোকাবেলায় পানি ও ওয়াটার পিউরিফিকেশন ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এটি স্থায়ী সমাধান নয়, এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ওইসব এলাকায় মানুষের বসবাস অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই জিও হাইড্রোলজিক্যাল সার্ভে এবং ভূগর্ভস্থের পানি ব্যবহার সীমিত করে সংকট মোকাবেলার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের কথা জানান এই কর্মকর্তা।


পানির সংকট মোকাবেলায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আসফার সায়মা। ভূগর্ভস্থ পানির অপচয় রোধে যত্রতন্ত্র পানির পাম্প বসানো বন্ধ করে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।


বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) তথ্য অনুযায়ী সুবর্ণচরে কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য ২৯৫টি সেচ পাম্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনুমোদনহীন আরো অন্তত তিন হাজার সেচ পাম্প বসিয়েছেন কৃষকরা। এর ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কোথাও পানি মিলছে না।

পড়ুন: নোয়াখালীতে চাঁদা না দেওয়ায় দলিল লেখকের ওপর হামলা

দেখুন: নোয়াখালী সোনাইমুড়ী আনসার সদস্যের অভিযানে অ*স্ত্র উদ্ধার |

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন