এক বছর আগে ফিনল্যান্ড তার বহুদিনের নিরপেক্ষ নীতি থেকে সরে এসে ন্যাটোর ৩১তম সদস্য হয়। বৈদেশিক নীতি এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আটলান্টিক মহাসাগরের দুই তীরবর্তি দেশগুলোর সামরিক জোটে ফিনল্যান্ডের অন্তর্ভুক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্তের কারণে মনে করা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তিতে মস্কোর সঙ্গে সখ্যতা রেখে চলার নীতি থেকে সরে আসছে হেলসিংকি। আগে নরডিক দেশটি ক্রেমলিনের সঙ্গে বরাবরই সম্পর্ক ভালো রাখার চেষ্টা করেছে।
রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের সীমান্তের দৈর্ঘ্য ১৩শ কিলোমিটার। কৌশলগত প্রতিরক্ষাসহ নানা বিষয়ে ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এখন ফিনল্যান্ড। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর ন্যাটোতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয় ফিনল্যান্ড। ফিনল্যান্ড মনে করে, ইউক্রেনে রুশ অভিযানের কারণে হেলসিংকির নীতিনির্ধারকদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে, ন্যাটোভুক্ত হলে রাশিয়া কখনোই ফিনল্যান্ডে হামলা করবে না। ন্যাটোর সনদে বলা আছে, এর সদস্যভুক্ত কোনো দেশে হামলার অর্থ পুরো ন্যাটোর ওপর হামলা। রাশিয়া কখনোই ন্যাটোভুক্ত কোনো দেশে হামলা করেনি।
আন্তর্জাতিক বিষয়ে ফিনল্যান্ডের গবেষক ম্যাট্টি পেসু জানিয়েছেন, ইউক্রেনে রুশ হামলার পর রাশিয়ার আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ এবং পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে হুমকির বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। পেসু মনে করেন, বর্তমানে রুশদের নিয়ে ফিনিশদের অবস্থান নেতিবাচক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর মধ্যের বিষয়গুলো সমাধানে যেন কোন ছাড় না দেওয়া হয়, সেই নীতিতে আছেন ফিনল্যান্ডবাসী।
১৯৯৫ সাল থেকে ফিনল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। তবুও ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আগে দেশটির বৈদেশিক নীতির কেন্দ্রে ছিলো আত্মকেন্দ্রিকতা এবং জাতীয় স্বার্থে পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনা। তবে, এখন ন্যাটোভুক্ত হওয়ার পর ফিনল্যান্ডকে ন্যাটোর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
২০২২ সালের মেতে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে ফিনল্যান্ড। শুরুতে রাশিয়া বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও ক্রমেই মস্কোর অবস্থান নেতিবাচক হয়েছে। ফিনল্যান্ডও রাশিয়ার সঙ্গে সব ধরনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। ইউক্রেনে হামলা বন্ধের আগে রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে তারও কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন।