৭৫ বছরে আওয়ামী লীগের অনেক অর্জন। ভাষা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান থেকে স্বাধীনতা। স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন থেকে, উন্নয়নের মহাসড়ক। সবই তাঁদের হাত ধরে। বঙ্গবন্ধুর পর ৪৪ বছর দলটির চালক শেখ হাসিনা। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এত বছরে দলটি নিজের দর্শন থেকে দূরে সরে গেছে। টানা ক্ষমতায় থেকে প্রভাব বেড়েছে আমলাদের। প্রবীন শীর্ষ নেতৃত্বকে তাই ভাবতে হবে ভবিষ্যত নিয়ে।
মুসলিম লীগের নেতৃত্বে ভারত-পাকিস্তান ভাগের পর, প্রগতিশীলদের দরকার হলো, আরও একটি সংগঠনের। ঢাকার রোজ গার্ডেনে বসলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকসহ রাজনৈতিক নেতারা।
গঠন হলো, পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, যুগ্ম সম্পাদক কারাবন্দি শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর চুয়ান্নর ভোটে ভূমিধস বিজয়, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরে স্বাধীনতা আন্দোলন। সবই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে।
পঁচাত্তরে এসে ষড়যন্ত্রের কবলে দেশের রাজনীতি। নির্যাতন, নিপীড়নে পড়ে দল, দেখা দেয় বিভেদ। এরপর একাশি থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যার পালা। দলের সভাপতি হয়ে, ঐক্যের যাত্রা। ২১ বছর পর, ৯৬ সালে সরকার গঠন। ২০০৮ থেকে টানা ৪ মেয়াদে এখনো ক্ষমতায়। সব মিলিয়ে, দলের ৭৫ বছরের ইতিহাসে, ৪৪ বছরই নেতৃত্বে শেখ হাসিনা।
এই দীর্ঘ পরিক্রমায়, মাথাপিছু আয়, অবকাঠামো উন্নয়ন বিপ্লব। অবশ্য বিতর্কও আছে। গণতন্ত্র এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলেন, টানা ক্ষমতায় থাকায় দলটি তাঁর দর্শন থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে।
এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মনে করেন, বদলে যাওয়া সময়ে মানুষ অনেক বেশি সচেতন। পুঁজিপতিদের রাজনীতি ও আমলার ক্ষমতায় লাগাম টানতে হবে। একই সঙ্গে আছে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ। এসব সুরাহা না হলে সংকটের জন্য তৈরি হতে হবে দলটিকে।
অবশ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপায়ও হাতে আছে দলটির। তবে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার।
আওয়ামী লীগ মনে করে, এই দীর্ঘ সময়ে স্বাধীনতা ও উন্নয়ন আওয়ামী লীগের বড় অর্জন। তবে, তৃণমূলই যে দলটির বড় ভিত্তি তাও মনে করিয়ে দেন এই নেতা।
টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায়, লক্ষ্য ৪১-এ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ। কিন্তু দলটির অধিকাংশ নেতা যারা বাংলাদেশের প্রথম প্রজন্ম, বয়সে প্রবীন। তাই শতবর্ষের পথে পা বাড়ানো দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে ভাবতে হবে নতুন করে। এমনটাই মত বিশ্লেষকদের।