পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলাম স্থানীয়দের গণপিটুনির শিকার হন। পরে কোনোমতে পালিয়ে তিনি প্রাণ রক্ষা করেন।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তার নতুন কার্পেটিং শুরু হতেই কিছু অংশ উঠে যেতে দেখা যায়। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী।
স্থানীয় ইউসুফ আলী বলেন, আমি ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছিলাম। দেখি আমার সামনেই নতুন কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। তখন পাশেই থাকা মিস্ত্রি বলেন—হাতুড়ি দিয়ে সেটা ঠিক করতে হবে।
নির্মাণকাজে নিয়োজিত মিস্ত্রি আবুল কালাম বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছু বালু জমে ছিল। ময়লা না সরিয়েই কার্পেটিং করায় এমন হয়েছে। এটা অনিয়মই।
প্রতিবাদকারী যুবক মাসুদ রানা বলেন, কাজ চলছে কাদা ও ধুলো-ময়লার ওপরেই। প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে হুমকি দেয়, ভিডিও করে রাখে। তখন আমরা স্থানীয়রা এক হয়ে কাজ বন্ধ করে দেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, এই রাস্তার কাজ বহুদিন ধরে চলমান। পাশের রাস্তাটি আগেই শেষ হয়েছে, অথচ এই রাস্তাটি বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এবারও অভিযোগ পেয়ে গিয়ে দেখি—কাজের মান খুবই খারাপ। আমি নিজে উপস্থিত থেকে কাজ বন্ধ করে দিই।
ঘটনার শিকার কার্য-সহকারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি কাজ তদারকি করতে গিয়েছিলাম। সাংবাদিকদের বলেছিলাম—কাজে কোনো অনিয়ম নেই। তখনই কয়েকজন উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারধর করে। আমি পালিয়ে বেঁচেছি।
তিনি বলেন, ১০ দিন আগে প্রাইম কোট দেওয়া হয়েছিল। বৃষ্টিতে কিছু বালু জমেছিল, পরিষ্কার না করেই কার্পেটিং শুরু হয়—যা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআর ট্রেডার্সের প্রতিনিধি মিজানুর ইসলাম বলেন, এটি ২০২০-২১ অর্থবছরের কাজ। আমি সাব-ঠিকাদার হিসেবে যুক্ত। বিস্তারিত মনে নেই, দেখে বলতে হবে। পরে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করেছে বলেও শুনেছি। তবে কোনো কর্মকর্তা গণপিটুনির শিকার হয়েছেন—এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

