25 C
Dhaka
সোমবার, মে ১২, ২০২৫

পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করলো ভারত, নিয়ন্ত্রণরেখায় ভয়াবহ সংঘর্ষ

ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করার পর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) জুড়ে ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে দু’দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘর্ষ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রোববার (৪ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, শনিবার রাজস্থানের সীমান্তে এই পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করে বিএসএফ। তবে রেঞ্জারটির নাম ও পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তিনি বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে রয়েছেন।

বিএসএফের এক কর্মকর্তা জানান, সীমান্তে নিয়মিত টহলের সময় ওই রেঞ্জার সীমান্ত অতিক্রম করেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে এটিকে উদ্দেশ্যমূলক অনুপ্রবেশ হিসেবে না দেখে একটি “অভ্যন্তরীণ তদন্ত” শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৩ এপ্রিল পাকিস্তান বিএসএফ সদস্য পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করে। তিনি পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। ভারতের দাবি, পাকিস্তান সাহুকে ফেরত দিতে বিলম্ব করছে এবং এর কোনো সময়সীমা জানায়নি। এর জবাবে ভারতও আটক রেঞ্জারকে ফেরত দিচ্ছে না।

রেঞ্জার আটক হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, রাজৌরি, পুঞ্চ, মেন্ধর, নৌশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টরে ব্যাপক গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়। এনডিটিভি বলছে, পাকিস্তানের সেনারা বিনা উসকানিতে গুলি ছুঁড়লে ভারতীয় বাহিনীও উপযুক্ত জবাব দেয়। প্রাণহানির কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া না গেলেও সংঘর্ষের মাত্রা ছিল ‘ব্যাপক’।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২৬ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটি সবচেয়ে বড় হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনার রেশ ধরেই উভয় দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনাও বাড়ছে। ভারত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তান পাল্টা সিমলা চুক্তি বাতিল এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

এই উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তান শনিবার ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্রকে “সিন্ধু মহড়ার অংশ” বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা একে ‘সরাসরি উসকানি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন ও কৌশলগত প্রস্তুতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। উভয় দেশেই যুদ্ধ-পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্কতা অবলম্বন শুরু হয়েছে। কূটনৈতিক অচলাবস্থা ও সামরিক উত্তেজনার এই চক্র আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। এ অবস্থায় দুই দেশের মধ্যে রেঞ্জার ও বিএসএফ সদস্যদের ফেরতের সম্ভাবনা এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

পড়ুন: ট্যাংক, কামান, গোলা নিয়ে সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের মহড়া

দেখুন: অর্থ ও খাবার সঙ্কটে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন