পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়ার বান্নু জেলায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ছয়জন সন্ত্রাসী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআর জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৩ এপ্রিল রাত থেকে ২৪ এপ্রিল রাত পর্যন্ত বান্নু জেলার বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন সন্ত্রাসী নিহত হয় এবং আহত হয় আরও চারজন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পাকিস্তান তার ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যতদিন সন্ত্রাসবাদের শেকড় পাকিস্তানে থাকবে, ততদিন অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
পাকিস্তানের চারটি প্রদেশ ও তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশ দুটি বিগত কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলটি মূলত তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, বেলুচিস্তানে সক্রিয় রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)।
২০২১ সাল থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালকে ধরা হচ্ছে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বছর হিসেবে। গত বছর দেশজুড়ে মোট ৪৪টি বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮৫ জন সেনা সদস্য এবং ৯২৭ জন বেসামরিক নাগরিক।
অন্যদিকে, গত বছর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী ৯৩৪ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। এতে বোঝা যায়, পাকিস্তান সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাস দমনে কতটা সক্রিয়।
বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় তালেবানদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি এবং সীমান্তে নজরদারির দুর্বলতা পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
সাম্প্রতিক এই অভিযানে সন্ত্রাসীদের নিহত হওয়ার ঘটনা দেশটির নিরাপত্তা দমননীতির একটি বড় উদাহরণ হলেও, এ ধরনের হামলা কতটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
পড়ুন: বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তানের বেলুচিস্তান
দেখুন: ভারত নাকি পাকিস্তান, সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে? |
ইম/