পাকিস্তানের ৮৫তম পাকিস্তান দিবস উপলক্ষে ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্ট হাউসে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ বছরের বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তি ছিলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো। তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘নিশান-ই-পাকিস্তান’ মরণোত্তর প্রদান করা হয়।
রোববার (২৩ মার্চ) রোববার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরওয়াই নিউজ।
রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি এই সম্মাননা ভুট্টোর কন্যা সানাম ভুট্টোর হাতে তুলে দেন। এসময় ভুট্টোর নাতি বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, নাতনি আসিফা ভুট্টো, সিনেট চেয়ারম্যান ইউসুফ রাজা গিলানি এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর সংকটময় সময়ে দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তার নেতৃত্বে একদিকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পুনর্গঠনের চেষ্টা চালায়, তবে ১৯৭৭ সালে সামরিক অভ্যুত্থান তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং ১৯৭৯ সালে একটি বিতর্কিত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। দীর্ঘ বছর পর সুপ্রিম কোর্ট তার মৃত্যুদণ্ডের কার্যকরী সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে, এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি কাজী ফায়েজ ঈসার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ গত বছর রায় দেয় যে, তাকে ন্যায়বিচারের সুযোগ না দিয়েই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
এই সম্মাননা প্রদান পিপিপির জন্য একটি বড় রাজনৈতিক মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বর্তমানে পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। তার দাদা জুলফিকার আলী ভুট্টোর উত্তরাধিকারকে সামনে রেখে দলকে আরও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপের ফলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানের সামরিক এবং বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ নিয়ে যে বিতর্ক উঠেছে, এটি একটি রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে গণ্য হতে পারে। পিপিপি এবং ভুট্টো পরিবার দীর্ঘকাল ধরে রাজনীতি এবং ক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, এবং তাদের উত্তরাধিকার এখনও শক্তিশালী।
এই সম্মাননা দেয়ার মাধ্যমে পাকিস্তান সরকার দেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা জানাল। ভুট্টোর প্রতি এই স্বীকৃতি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন এক মোড় আনতে পারে এবং এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার শক্তি এবং স্থিতিশীলতার প্রতীক হতে পারে।

পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশ্লেষকরা বলছেন,
ভুট্টোর প্রতি এই স্বীকৃতি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামরিক ও বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ নিয়ে বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে, এই পদক্ষেপকে একটি রাজনৈতিক বার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
পড়ুন: ভারতকে টপকে চাহিদার শীর্ষে পোশাক
দেখুন: থেকে আসছে টনকে টন চাল, ভারতের মাথায় হাত! |
ইম/