প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী নেতাদের দুইজন পারভেজ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল এবং বেশ কয়েকজন আশপাশে ছিল। এটা ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়েছে এবং তাদের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। আমি আশা করব বৈষম্যবিরোধী নেতারা তাদের ভুল বুঝে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে পারভেজের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে ভূমিকা পালন করবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিরোনিয়া ইউনিয়নের কাইচান গ্রামে নিহত পারভেজের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, পারভেজ হত্যার পর পরই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্ব সরাসরি বনানী থানায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছে। এ সময় তারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীরা যেন এই মামলায় আসামি না হয়, সেজন্য প্রেসার ক্রিয়েট করে। পরবর্তীতে রাতের বেলায় তারা একটি প্রেস কনফারেন্স করল, এটি তাদের নেতৃত্বের ব্যর্থতা হিসাবে দেখব। তারা সরাসরি অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে যে- আমরা নাকি বৈষম্যবিরোধী নেতাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়িত করে অভিযোগ করেছি। কিন্তু পরবর্তীতে যখন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ হলো, তখন দেখা গেল বৈষম্যবিরোধী নেতাদের দুই জন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল এবং বেশ কয়েকজন আশপাশে ছিল। এরপর থেকে তাদের কোনো স্টেটমেন্ট নেই।
তিনি বলেন, তাদের সংগঠনের মাত্র যাত্রা শুরু হয়েছে, আন্দোলন-সংগ্রামে তাদের অভিজ্ঞতা কম। আমি বিশ্বাস করি- তারা ধীরে ধীরে নেতৃত্বের পরিপূর্ণতা লাভ করবে। কিন্তু তারা এই পর্যায়ে নেতৃত্বের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে দায়সারা ঘোচের কথা বলেছে। আমি আশা করছি একটি হত্যাকাণ্ড নিয়ে এ ধরনের মিথ্যাচার করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তাদের ওপর যে সামান্যতম আস্থা রয়েছে, সে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। যে কোনো ঘটনায় আমি তাদেরকে সঠিত তথ্য প্রদানের আহ্বান জানাই এবং যে কোনো হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তাদেরকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই। তাদের নেতাকর্মী যেই হয়ে থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তারা শুরুতে যেভাবে ভুল করেছে, প্রভাব বিস্তার করার, তারা যেন তাদের ভুল বুঝে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে পারভেজের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হয়, তারা সে ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এর আগে দুপুরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সহ-সভাপতি ইজাজুল কবীর রুয়েল ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিরোনিয়া ইউনিয়নের কাইচান গ্রামে নিহত পারভেজের কবর জিয়ারত করতে আসেন। এতে ময়মনসিংহ দক্ষিণ, উত্তর ও মহানগরসহ ভালুকা উপজেলা ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ছাত্রদল নেতারা নিহত পারভেজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পারভেজের বাবা জসীম উদ্দিন এবং মা পারভীন ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা বলে তাদের সান্ত্বনা দিয়ে সব সময় তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। এতে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নাইমুল করিম লুইন, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাবাবুর রহমান রানা, সাধারণ সম্পাদক দাউদ রায়হান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন : আদালতে পারভেজ হত্যার দায় স্বীকার আসামি মাহাথির ও কামালের