১৫/০৬/২০২৫, ৯:০১ পূর্বাহ্ণ
27.9 C
Dhaka
১৫/০৬/২০২৫, ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল সহ্য করা হবে না বলে মোদির হুঁশিয়ারি

কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধ ঘিরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে ভারত কোনও ধরনের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল সহ্য করবে না বলে হুঙ্কার দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার ভারতের স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই হুঙ্কার দিয়েছেন তিনি।

সন্ত্রাসের সদর দফতর ধ্বংস করে দিয়েছি। পরমাণু যুদ্ধের হুমকি ভারত সহ্য করবে না। এমন হুঁশিয়ারি করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

আজ সোমবার (১২ মে) রাত সাড়ে ৮টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

ভাষণের শুরুতে তিনি পেহেলগামে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী ও তাদের অভিযানের প্রশংসা করেন। নরেন্দ্র মোদি বলেন, একজন নারীর সিঁদুর মুছে ফেলার মূল্য কতটা চড়া হতে পারে, তা সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপে নিশ্চিত হয়েছে। এখন প্রত্যেক সন্ত্রাসী এটা জানে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি এই দেশের সকল মা, বোন ও কন্যাদের প্রতি অপারেশন সিঁদুর উৎসর্গ করছি…অপারেশন সিঁদুর শুধু একটি নাম নয়, এটা মানুষের আবেগ ও অনুভূতির প্রতিফলন।’’

মোদি বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী সর্বদা সতর্ক আছে। আকাশ থেকে মাটি সর্বত্র আমরা প্রস্তুত থেকেছি। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আবার জবাব দেয়া হবে। কোনও ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’ ভারত সহ্য করবে না।

তিনি আরও বলেন, আর সন্ত্রাসবাদীদের চোখরাঙানি সহ্য করবে না ভারত। পাকিস্তানকে যদি বাঁচতে হয়, ওদের সন্ত্রাসের পরিকাঠামো নির্মুল করতে হবে।

এর আগে, নিজের বাসভবনে উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে এমন এক সময়ে যখন মাত্র দুদিন আগে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্ত সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে ভারত।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিম্নরূপ :

  • দেশের সক্ষমতা ও স্থিতিশীলতা দেখা গেছে। প্রথমে আমি সশস্ত্র বাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী ও সব গোয়েন্দা সংস্থাকে অভিবাদন জানাই। প্রত্যেক ভারতীয়র পক্ষ থেকে আমি সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানাই।
  • আমরা আমাদের বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি।
  • অপারেশন সিঁদুর কেবল একটি নাম নয়; এটা আমাদের জনগণের আবেগের প্রতিফলন। এটা ন্যায়বিচারের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার।
  • ২২ এপ্রিল বেসামরিকদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তারা লোকজনকে ধর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে শিশুদের সামনে হত্যা করেছে। এটি আমাকে গভীরভাবে আঘাত করেছে। এই হামলার পর পুরো জাতি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ চেয়েছিল।
  • আমাদের বাহিনী পাকিস্তানের ভেতরে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে নিখুঁত হামলা চালিয়েছে।
  • মাত্র ৩ দিনে আমরা পাকিস্তানের অকল্পনীয় ক্ষতিসাধন করেছি।
  • আমাদের পদক্ষেপের ব্যাপকতা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
  • আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সন্ত্রাসীদের কাঁপিয়ে দিয়েছে।
  • বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকে ছিল সন্ত্রাসের বিশ্ববিদ্যালয়।
  • আমরা সেসব সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে দিয়েছি।
  • হামলায় পাকিস্তানে শতাধিক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
  • পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিল, আর ভারত পাকিস্তানের বুকে আঘাত হেনেছে।
  • ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পাকিস্তানের বিমানঘাঁটি ধ্বংস করেছে।
  • পাকিস্তান তখন যুদ্ধ থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে থাকে। তারা শান্তির উপায় বের করার জন্য বিশ্বকে অনুরোধ করতে থাকে।
  • আমরা সামরিক অভিযান বন্ধ করিনি; কেবল স্থগিত করেছি। পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর আমাদের প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে।
  • বিশ্ব পাকিস্তানের কুৎসিত চেহারা দেখে ফেলেছে।
  • পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা সন্ত্রাসীদের জানাজায় অংশ নিয়েছেন।
  • একুশ শতকের যুদ্ধে বিশ্ব দেখেছে কীভাবে ভারতের তৈরি অস্ত্র কাজ করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি।
  • সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস ও বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। আর পানি এবং রক্তও একসঙ্গে বইতে পারে না।
  • সন্ত্রাস একদিন পাকিস্তানকেই গ্রাস করবে।
  • পাকিস্তানকে নিজ স্বার্থেই সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন করতে হবে।
  • আমরা যদি কখনও পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করি, সেটি কেবল সন্ত্রাস ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির নিয়েই হবে।
  • শান্তির পথ শক্তির মধ্য দিয়েই তৈরি হয়।
  • প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।

পড়ুন : রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন মোদি

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন