নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার একটি গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে ঘটে গেল ভয়াবহ রক্তাক্ত হামলার ঘটনা। হামলায় গুরুতর আহত হয়ে একই পরিবারের তিন সদস্য মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
বুধবার (১৪ মে) বিকেলে কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা নথিভূক্ত করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।
মামলার বাদী সাকিমা আক্তার জানান, আমার স্বামী, শ্বশুর আর ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করতে এসেছিল। এখনো হাসপাতালের বিছানায় তারা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে।
এ ঘটনায় কলমাকান্দা থানায় মামলা দায়ের করা হলেও আজ এখন পর্যন্ত আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। বরং মামলার পর থেকে আসামিপক্ষ হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২ মে রাতে কলমাকান্দা থানাধীন বড়খাপন ইউনিয়নের রিকা গ্রামে ইদ্রিছ আলী আকন্দ ও তার পরিবারের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে প্রতিবেশী আব্দুর রব আকন্দের (৭৫) বাড়িতে হামলা চালান। অভিযোগ রয়েছে, রাতে বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সেলিম আকন্দ (৫০), তার বাবা আব্দুর রব আকন্দ এবং ছেলে সাকিব আকন্দকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
হামলায় সেলিম আকন্দের মাথায় কুড়ালের আঘাতে মারাত্মক ক্ষত হয়। তার পা ও হাঁটুর নিচে ধারালো অস্ত্রের কোপে হাড় ভেঙে যায়। বাধা দিতে গেলে তার বাবা আব্দুর রব আকন্দকেও পায়ের রগ কেটে ও হাত ভেঙে ফেলা হয়। পরে সাকিব আকন্দকেও উঠোনে টেনে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। হামলার সময় সেলিম আকন্দের স্ত্রী এগিয়ে এলে তাকেও হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে জানান প্রতিবেশীরা।
স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাজন মিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে রয়েছে। মামলা তদন্তাধীন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
স্থানীয়দের দাবি, পারিবারিক বিরোধ থেকে এই হামলা হলেও সেটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং হত্যার উদ্দেশ্যেই সংঘটিত। তারা দ্রুত বিচার ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
পড়ুন : নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে বোরো ফসলের ক্ষতি, বিধ্বস্ত বাড়ি-ঘর