শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের দেশ ছেড়ে পালানোর হিড়িক পড়েছে। অনেকে ভয়ে দেশের ভেতরেই আত্মগোপনে চলে গেছেন। শুধু মন্ত্রী-এমপি নয়, বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারাও ভয়ে আত্মগোপনে গেছেন। এই তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীও।
বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটেছে। ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও ভয়াবহ বেকায়দায় পড়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা। অনেকে সুযোগ বুঝে দেশ ছাড়তে পারলেও আটকে পড়া অনেক এমপি-মন্ত্রী ও অসংখ্য নেতাকর্মী প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত বলছে, গত ১৪ই জুলাই থেকে ১০ই আগস্ট পর্যন্ত ২৭ দিনে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ৯০ জন সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও রাজনৈতিক নেতা। এছাড়া বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে অন্তত ১০ জন মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালীদের। বিমানবন্দরে এসেও পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ফিরে গেছেন কমপক্ষে ২৫ জন মন্ত্রী-এমপি, রাজনৈতিক নেতা ও দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা।
এদিকে সরকার পতনের পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের বেশকিছু প্রভাবশালী আমলা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিশেষ করে সচিবরা মহা আতঙ্কে রয়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছেন। পদোন্নতি বঞ্চিতরা তাদের সামনে পেলে অপমান, অপদস্ত করবেন এমন ভয়ও রয়েছে তাদের মধ্যে। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। খোঁজ নেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের।
পালিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আব্দুর রউফ তালুকদার। গত ৫৩ বছর গভর্নর পদে দায়িত্ব পালনকারীদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আব্দুর রউফ তালুকদারই একমাত্র গভর্নর, যিনি সরকার পতনের পর লাপাত্তা হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত অজ্ঞাত স্থান থেকেই শনিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান প্রবল প্রতাপ দেখানো এ গভর্নর।
এছাড়া দেশ ও দেশের বাইরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী, বিচারপতি ও উচ্চপদস্থ আমলা।