রাজধানীর ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটকের জন্য পুরস্কারসহ অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ পাচ্ছেন পাঁচ শ্রমিক।
সাহসিকতার জন্য সেই শ্রমিকদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।একই সঙ্গে তাদেরকে পুলিশের অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
এর আগে বুধবার (২৬ মার্চ) ভোরে ধানমন্ডিতে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাড়িতে দুর্ধর্ষ এক ডাকাতি হয়। ডাকাতরা র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র পরিচয়ে এম এ হান্নান আজাদের বাসা এবং ওই ভবনের একটি অফিস থেকে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।
ওই সময় পাশের নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচজন শ্রমিক জীবন বাজি রেখে চার ডাকাতকে ধরে ফেলেন। পরে আরও দুই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফরহাদ বীন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহাম্মেদ (২৩) ও ওয়াকিল মাহমুদ (২৬), আবদুল্লাহ (৩২), সুমন (২৯), আবদুল্লাহ (৩২) ও গাড়িচালক সুমন (২৯)।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, ধানমন্ডিতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদের প্রতিরোধ করা এবং তাদের ধরতে সহায়তা করায় পাঁচজন শ্রমিকের নাম পাওয়া গেছে। সাহসিকতার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ওই পাঁচ শ্রমিকের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া এই পাঁচজনকে অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।
চলমান রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ডিএমপি বিস্তারিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জানিয়ে তালেবুর রহমান বলেন, ‘টহল জোরদার, কৌশলগত জায়গায় তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া দু-একটি যে ঘটনা ঘটছে সেগুলোর সঙ্গে সঙ্গে উদঘাটন করে আসামি গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। এর মধ্যে কেউ যদি অপরাধ করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘ধানমন্ডিতে জুয়েলার্স মালিকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত র্যাব লেখা কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের র্যাব লেখা ক্যাপ, দুটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরি ছেনি, একটি লাল রঙের পুরোনো স্লাই রেঞ্জ ও নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা জব্দ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডাকাতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ডাকাতিতে তাদের ২৫ থেকে ৩০ জনের টিম জড়িত। তাদের মূল পরিচয় উদঘাটন করে বিস্তারিত জানানো হবে। প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তার ছয় ডাকাত এলোপাতাড়ি তথ্য দিয়েছেন, তাদের রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
