পাকিস্তানের সাথে সংঘাতের পর প্রতিরক্ষা খাতে ৫০ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ বৃদ্ধি করছে ভারত।
আজ শুক্রবার (১৬ মে) এক সরকারি সূত্রের বরাতে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। মূলত সমরাস্ত্র এবং আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি কেনার ক্ষেত্রেই এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানা গেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, অপারেশন সিন্দুরের ফলস্বরূপ ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেটে ৫০ হাজার কোটি টাকার বৃদ্ধি হতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অর্থ বরাদ্দ অতিরিক্ত বাজেটের মাধ্যমে দেওয়া হবে। এতে প্রতিরক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ ৭ লক্ষ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যাবে।
চলমান আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে সর্বশেষ সংঘাতের পর ভারতীয় সরকার ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি প্রতিরক্ষা জোরদার কর্মসূচির অংশ হিসেবে অতিরিক্ত ৫০ হাজার কোটি রুপি প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এই পদক্ষেপ ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজবুত করার একটি কৌশলগত প্রয়াস হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
চলতি বছরের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ৬.৮১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। গত বাজেটের তুলনায় চলতি বছরের বাজেটে বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৯.৫৩ শতাংশ। অবশ্য গত বছরে প্রতিরক্ষা বাজেট প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, বাড়ানো এই বাজেট মূলত গবেষণা ও উন্নয়ন, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার কাজে ব্যবহৃত হবে। শীতকালীন সংসদ অধিবেশনে এর অনুমোদন নেওয়া হবে।
২০১৪ সাল থেকে প্রতিরক্ষা খাতের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিজেপি সরকারের প্রথম বছর ২০১৪-১৫ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে ২.২৯ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। বর্তমানে প্রতিরক্ষা বরাদ্দ সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ, যা মোট বাজেটের ১৩ শতাংশ।
এই প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ও সম্ভাব্য বাজেট বৃদ্ধি ঘটছে পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর জবাবি পদক্ষেপ অপারেশন সিন্দুর এর পর। এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
ভারত-পাকিস্তান ১০০ ঘণ্টা ‘যুদ্ধের’ পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং দেশের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের উপর জোর দেন এবং দীর্ঘমেয়াদে একেই একমাত্র সমাধান হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “যদি আমরা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিদেশ থেকে কিনি, তাহলে সেটি আসলে নিরাপত্তা আউটসোর্স বা অন্য কারও হাতে নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার সমান। এটা দীর্ঘমেয়াদে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”
এনএ/