পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় দানা আরো ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে; ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে এ ঘূর্ণিবায়ুর চক্র এগিয়ে যাচ্ছে ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে।
ঘূর্ণিঝড়টি আজ সকাল ৬টায় (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮৫ কি.মি. দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে ঝড়-বৃষ্টি
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে ঝড় ও বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নদী ও সাগর উত্তাল রয়েছে। নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়েও এক থেকে দেড় ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল রাত থেকে এ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। তবে উপকূলে মাঝে মাঝে বাতাসের চাপ সামান্য বৃদ্ধি পায়।
বেড়িবাঁধ নিয়ে শঙ্কায় সাতক্ষীরা উপকূলবাসী
ঘূর্ণিঝড় দানা’র সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানার শঙ্কা না থাকলেও জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে উপকূলে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ। সাতক্ষীরা উপকূলের অন্তত নয়টি পয়েন্টে ৬ কিলোমিটার উপকূলরক্ষা বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সামান্য জলোচ্ছ্বাসে এসব পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে দুই উপজেলার বিস্তির্ণ জনপদ।
উপকূল থেকে ১০ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে ওড়িশা
সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তৎপরতা শুরু করেছে ওড়িশার রাজ্য সরকার। রাজ্যের ঝুঁকিতে থাকা বিভিন্ন থেকে মোট ১০ লাখ ৬০ হাজার ৩৩৬ জন মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে ৪ লাখেরও বেশি মানুষকে স্থায়ী-অস্থায়ী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওড়িশা রাজ্য সরকারের কর ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মন্ত্রী সুরেশ পূজারী।