পাঁচ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শি জিং ইউ নামে এক চীনা যুবকের সাথে পরিচয় বৃষ্টির। শুধু পরিচয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে সে সম্পর্ক গড়াই মনের আদান-প্রদান পর্যন্ত। এরপর সেই চীনা যুবক বাংলাদেশে এসে ধর্ম পরিবর্তন করে বৃষ্টিকে বিয়ে করেছেন। এখন তার নাম সোহান আহাম্মেদ। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর উত্তরপাড়া এলাকায়। বৃষ্টি(২১) একই এলাকার মোতালেব মিস্ত্রির মেয়ে। তিনি সন্মান ১ম বর্ষের ছাত্রী। তবে এ বিয়েতে ওই মেয়ের পরিবারের খুশি থাকলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। তারা বলছে,ভীন দেশের অজানা এক যুবক। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আরো খোঁজ খবর নিয়ে তবেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। স্থানীয় ও পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান শি জিং ইউ(২৮)। সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগরে প্রেমিকা বৃষ্টির বাড়িতে পৌঁছান তিনি। গতকাল রোববার ওই যুবক প্রেমিকার সঙ্গে মুসলিম রীতিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। এর আগে এ দেশের আইন অনুযায়ী তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার নতুন নাম সোহান আহাম্মেদ। জানা গেছে, শি জিং ইউ চায়নার হেনান অঞ্চলের শি লিং জাং ও জুয়ে চুন সুই দম্পতির ছেলে। পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী,তার জন্ম সাল ১৯৯৭। ২০২৬ সালের ১৮ আগষ্ট পর্যন্ত তার ভিসার মেয়াদ রয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খাজানগর উত্তরপাড়ার মোতালেব মিস্ত্রির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়,এলাকার উৎসাহী মানুষজন চীনা যুবককে এক নজর দেখতে ভিড় জমিয়েছে। বিদেশী জামাইকে নিয়ে বেশ হাসিখুশি দেখা যায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। এ সময় সাংবাদিক দেখে প্রথমে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানালেও পরে বৃষ্টি বলেন,পাঁচ মাস আগে ফেসবুকে শি জিং ইউয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শি জিং ইউ বাংলাদেশে আসতে চাইলে আমি তাকে আসতে বলি। এরপর সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ২০০৯ সাল থেকে চীন সরকার ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, সেটা আমি জানিনা। তবে তার সাথে আমার পরিচয় ফেসবুকে। যেহেতু আমি চায়না ভাষা বুঝি না তাই ট্রান্সলেটর অ্যাপ ব্যবহার করতাম। তার পরিবারের সাথেও আমি কথা বলেছি। উভয় পরিবারের সম্মতিতে এই বিয়ে। এতে আমি ও আমার পরিবার খুশি। শি জিং ইউ তার সাথে আমাকে চায়না নিয়ে যেতে চেয়েছে বলে জানান বৃষ্টি। এ সময় ভয়েস ট্রান্সলেটের মাধ্যমে কথা হয় শি জিং ইউয়ের সাথে। তিনি উত্তরে বলেন,বাবা-মা ও তিন ভাই মিলে তাদের পরিবারে পাঁচজন সদস্য। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি মেজ। এ সময় ভিডিও কলে ছােট ভাইয়ের সাথে পরিচয় করে দেন। তবে এই বিয়ে নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় কয়েকজন বলেন,বিদেশী ছেলে। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার সম্পর্কে আরো খোঁজ খবর নেওয়া উচিত ছিল পরিবারের। এ বিষয়ে মেয়ের বাবা মোতালেব মিস্ত্রি নাগিরক টেলিভিশনকে বলেন,রোববার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা সবাই খুশি। ছেলের বিষয়ে আমার মেয়ে ও জামাইয়ের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। যতটুকু জানতে পেরেছি জামাইরা তিন ভাই। জামাইও চাকরি করে। তার এক ভাই সেনাবাহিনীতে আছে। তাছাড়া তার বাবার রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে।
পড়ুন: বরগুনার পাথরঘাটায় এক হাজার মানুষ পেলেন বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা
দেখুন: রহস্যে ঘেরা বিএসইসিতে পারবেন কি থাকতে চেয়ারম্যান?
ইম/


