ডেঙ্গুর প্রকোপে বিপর্যস্ত বরগুনা। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১০২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন যা চলতি বছরের একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। এতে করে জেলার মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৫৯ জনে। সরকারি হিসেবে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন, বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ২৭ জন। মৃত্যু আর আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান এই সংখ্যায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে উপকূলবাসী।
ডেঙ্গুর সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব দেখা যাচ্ছে বরগুনা সদর উপজেলায়, যেখানে একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ জন। বাকি আক্রান্তরা পাথরঘাটা, তালতলী ও বামনা উপজেলায়। ডেঙ্গুতে মৃত ২৭ জনের মধ্যে ২৩ জনই বরগুনা সদর উপজেলার বাসিন্দা। এটি আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছে জেলার সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে এখন সদর উপজেলা।

এই মুহূর্তে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২২৭ জন। এর মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৬৬ জন । যেখানে নেই আইসিইউ সুবিধা। বাকি রোগীরা আমতলী, বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা ও তালতলীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। সীমিত জনবল ও অবকাঠামোতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, কিন্তু পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ছে।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় চাপ বাড়ছে। এই অবস্থায় মশক নিধন কার্যক্রম, পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা এবং জনসচেতনতা ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব নয়। এখনই উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
এদিকে, বরগুনাবাসীর মধ্যে বাড়ছে হতাশা ও আতঙ্ক। মানুষ বলছে ডেঙ্গু এখন আর শুধু মৌসুমি রোগ নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে জীবননাশকারী এক দুর্যোগ।
পড়ুন : বরগুনায় ভয়াবহ ডেঙ্গু হটস্পট, বরগুনায় ডেঙ্গুতে নতুন করে আরও ৯৩ জন আক্রান্ত