34.5 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় আলোচনায় ছিল ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি

এবারের বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নেয়ার সবচেয়ে প্রতীক্ষিত আয়োজন ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’র আলোচনার বিষয় ছিল ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি।

বাংলাদেশে দীর্ঘসময়ের ফ্যাসিবাদী শাসনের চিত্র তুলে ধরতে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফ রাখা হয়েছে। বাঁশের বেত-কাঠ দিয়ে মুখাকৃতিটি তৈরির পর গত শনিবার ভোরে এক দুর্বৃত্ত এটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। পরে ককশিটের ওপর পুনরায় তৈরি করা হয় এটি।

আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।

শোভাযাত্রাটি চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি হয়ে আবার চারুকলা প্রাঙ্গণেই গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এবারের প্রতিপাদ্য শ্লোগান ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ। রঙিন মুখোশ, বিশালাকৃতির কাঠামোসহ লোকজ শিল্পে সাজানো মিছিলটি যেন রঙের নতুন আবহে সাজিয়ে দিয়েছে বাঙালির মন। এছাড়া একাধিক মাঝারি ও ছোট মোটিফও অংশ হয়েছে শোভাযাত্রার। রয়েছে ইলিশ, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, তরমুজ ও ‘পানি লাগবে পানি’ প্রতিকৃতি।

এতে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে, কেউ বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে। প্রিয়জনদের সঙ্গে ছবি তোলা, রঙিন পোশাকে রাস্তায় হাঁটা, আর বাচ্চাদের উচ্ছ্বাসে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

সাধারণ মানুষেরও উৎসাহের কমতি নেই। দূরদূরান্ত থেকে আগেভাগেই অনেক মানুষ এসে ভিড় করেছেন চারুকলা প্রাঙ্গণে। প্রিয়জনের সঙ্গে ছবি তোলায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে অনেককে। শিশুদের মধ্যেও দেখা গেছে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।

উল্লেখ্য, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও শোভাযাত্রার রুটজুড়ে রয়েছে কড়া নজরদারি।


গান, কবিতা ও আনন্দ শোভাযাত্রায় বরণ করে নেয়া হচ্ছে বাংলা নতুন বছরকে। তবে শুধু দেশের মানুষ নয়, নেচে-গেয়ে উৎসবে মেতে উঠেছেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও পর্যটকরাও।

ঐতিহ্যের ধারায় সুর, কাব্য আর কথামালায় নতুন বছর ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে স্বাগত জানালো বাংলাদেশ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভোরের আলো ফুটতেই ছায়ানটের আনুষ্ঠানিকতায় রমনা বটমূলে সুর-লহরীতে বরণ করা হয় নতুন সূর্য।


এবারের মূল বার্তা, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। অতীতের অশুভকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরে সবার চাওয়া-বিভেদ-অশান্তি ঘুচে দৃঢ় হোক সম্প্রীতির বন্ধন। এ আয়োজনের প্রকাশ পায় ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকার বার্তাও।

সকাল ৯টায় ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে বের হয় ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এতে অংশ নেন চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মী এবং নানা বয়সি মানুষ।

এতে অংশ নেন জাপান, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানিসহ নানা দেশের পর্যটক ও শিক্ষার্থীরাও। কেউ গলায় বাঁশি ঝুলিয়ে বাজাচ্ছেন, কেউ আবার লাল-সাদা শাড়ি-পাঞ্জাবিতে বাঙালির সাজে ঢুকে পড়েছেন।

শোভাযাত্রায় মুখোশ, পাপেট, বাঁশের তৈরি বাঘ, পাখি, মাছসহ নানা বিশালাকৃতির শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় গ্রামীণ জীবন ও প্রকৃতিনির্ভর মানুষের সংগ্রামের রূপ।

পড়ুন : আলোয় আলোয় মুক্তির সন্ধানে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন