28.4 C
Dhaka
সোমবার, এপ্রিল ২১, ২০২৫

ব্যবসায়ীকে কুপানো সদ্য বহিস্কৃত সেই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা

বেআইনি জনতাবদ্ধে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মারপিট, গুরুতর জখমসহ চুরি, চাঁদা দাবি আদায় ও ভীতি প্রদর্শনের অপরাধে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ পৌর যুবদলের সদস্য সচিব পদ থেকে সদ্য বহিস্কৃত সেই মো. ফয়সাল আহমেদ খোকনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

ভুক্তভোগী মো. জসীম উদ্দীন নিজে বাদী হয়ে ফয়সাল আহমেদ খোকনকে প্রধান আসামিসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মোহনগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিকবার চাঁদা দাবি ও আহত করার কথা উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে মামলার বাদী ঢাকায় চিকিৎসাধীন।

অন্যান্য এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন- যুবদল নেতা মো. হুমায়ুন (৪০), যুবদল নেতা মো. নুরুজ্জামান (৩৯), ছাত্রদল নেতা ইলিয়াস জামান রবিন (৩৮), ছাত্রদল নেতা অরিন (৩০), মো. মোজাম্মেল (৩৭), মো. হাফিজুর (২৫), মোশারফ হোসেন, মহসিন (৪৫) ও পুতুল মিয়া (৫০)।

মামলার বাদী হলেন, আহত মো. জসীম উদ্দীন উপজেলার পানুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রাজধানীতে থাকা রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স আফিফ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী এবং পরিবারসহ ঢাকায় বসবাস করেন।

আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান মামলা রুজুর এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এরআগে গত ১৯ মার্চ বাদীর অভিযোগটি থানায় মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়।

এজাহারে উল্লেখ, মামলার বাদী ও আসামিরা একই এলাকা ও ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আসামিরা দীর্ঘদিন থেকেই বাদীর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। ভয় পেয়ে ক্রমান্বয়ে বাদী কিছু টাকা দেওয়ার পর আর দিতে সম্মত হননি। গত ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে মোহনগঞ্জের বিরামপুর বাজারে রামদা, সাবল ও ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বাদীকে আঘাত করেন আসামিরা। এতে বাদীর পরিহিত জ্যাকেট কেটে বাম পাশে পেটের অংশ অনেকটা কেটে যায়। পরে বাদী দৌঁড়ে একটি দোকানে ঢুকে পড়েন। এ ঘটনায় বাদী যদি থানায় যায় অথবা মামলা করলে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান ও ফের চাঁদা দাবি করেন আসামিরা। প্রাণের ভয়ে আসামিদেরকে তিন লক্ষ দেন এবং এর কিছুদিন পর আবার ১০ লক্ষ টাকা দাবি করলে তা দিতে অসম্মতি জানান বাদী জসীম উদ্দীন।

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় বাদী ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। গত ১৪ মার্চ এলাকার বিভিন্ন মসজিদে ইফতার করানোর উদ্দেশ্যে জুমা’র নামাজ শেষে আনুমানিক বিকেল ৩টার দিকে পাথারঘাটা ফলের দোকানে কেনাকাটারত অবস্থায় মামলার প্রধান আসামি অতর্কিতভাবে জসীম উদ্দীনকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় সজোরে কোপ মারেন। আসামি মো. হুমায়ুন পিস্তল তাক করে বল্লম দিয়ে পেটে ঘাই মেরে বাদীকে রক্তাক্ত জখম করেন। চিৎকার করতে থাকলে কয়েকজন আসামি মিলে বাদীর হাত-পা ধরে রাখেন এবং আসামি নুরুজ্জামান লোহার হাতুড়ি দিয়ে বাদীর দুই পায়ে ইট ভাঙ্গার মতো বাড়াইতে থাকেন। ইফতারের বাজার খরচ ও ঈদে কেনাকাটার জন্য বাদী সাথে থাকা হাত ব্যাগসহ তিন লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ও পকেটে থাকা দেড় লক্ষ টাকা মূল্যমানের আইফোন ছিনিয়ে নেন আসামিরা।

এসব দেখে গ্রামের প্রতিবেশী ভাই মো. জসিম মিয়া (৩০) বাদীকে উদ্ধার করতে আসলে তাকেও মেরে নীলা-ফুলা জখম করা হয়। অনেকক্ষণ যাবত আঘাত করার একপর্যায়ে বাদী মরে গেছে ভেবে আসামিরা স্থান ত্যাগ করে চলে যান।

এ বিষয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান জানান, আসামিদের গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

এ ঘটনায় গত শনিবার (১৫ মার্চ) ‘নাগরিক ডটকমে’ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই দিনেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজূল ইসলাম ভুঁইয়ার প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে মোহনগঞ্জ পৌর যুবদলের সদস্য সচিব ফয়সাল আহমেদ খোকনকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিস্কার করা হয় এবং খোকনের কোন ধরনের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নিবে না।

এনএ/

দেখুন: আমরণ অনশনের ঘোষণা ইডেন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃতদের

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন