26.8 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫

বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়ন: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার পথে চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সমাধান

নারীর ক্ষমতায়ন টেকসই উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) এর ৫ নং লক্ষ্যমাত্রায়, নারীর সমান অধিকার, নেতৃত্ব ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশ গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাঠামোতে, নারীদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও এখনো নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নারীদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।

নারী ক্ষমতায়নের বর্তমান চিত্র: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, বাংলাদেশে বর্তমানে নারী শিক্ষার হার ৭২%। তবে, কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণ ৩৬%। এদিকে, পোশাক শিল্পে নারীদের অংশগ্রহণ প্রায় ৮০%, যা দেশের অর্থনীতিতে নারীদের বিশাল অবদান প্রমাণ করে।

এছাড়া, জাতীয় সংসদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ছিলো ২১%, যা দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় বেশি। তবে উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনসহ প্রযুক্তি খাতগুলোতে নারীদের অংশগ্রহণ এখনও কম।

প্রতীকি ছবি/ সংগৃহীত

নারী ক্ষমতায়নের চ্যালেঞ্জ

বিশ্লেষকদের মতে, নারীদের উন্নয়নের পথে প্রধান বাধা সমাজের প্রচলিত ধ্যানধারণা, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও নীতিগত সীমাবদ্ধতা। বাংলাদেশে অনেক নারী এখনো পরিবার ও সমাজের বাধার কারণে উচ্চশিক্ষা বা কর্মসংস্থানে অংশ নিতে পারেন না।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ মাত্র ৩৬%, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। বিশেষ করে প্রযুক্তি ও প্রশাসনিক খাতে নারীর সংখ্যা এখনও আশানুরূপ নয়। এক্ষেত্রে, মাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, নিরাপত্তাহীনতা, প্রযুক্তি ও উদ্যোক্তা খাতে পিছিয়ে থাকা সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নারী ক্ষমতায়নের সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি দেখিয়েছে। উদ্যোক্তা খাতে নারীদের প্রবেশ এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সুযোগ বাড়ানো গেলে নারীরা অর্থনীতিতে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবে।

নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা, আইনি সহায়তা বৃদ্ধি এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগই পারে বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি নিয়ে যেতে।  

উদ্যোক্তা হিসেবে ই-কমার্স ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় নারীদের সংখ্যা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের নতুন দ্বার খুলবে। নারীদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিশেষ ঋণ সুবিধা, কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।

ছবি:
ছবি: সংগৃহীত

নারী ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা

নারী উন্নয়ন ছাড়া লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন অর্জন সম্ভব নয়। এছাড়া, নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানসম্মত শিক্ষা   উন্নত কর্মসংস্থান বাস্তবায়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও জোড়দার হবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

পড়ুন: ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০-এর আলোকে বাংলাদেশ ও বিশ্ব

টেকসই উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ: দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রয়োজন কার্যকর আইন ও নীতিমালা

এসএম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন