26 C
Dhaka
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

বাংলাদেশে পুরোদমেই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে আদানি

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের ভারতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার। এর মধ্য দিয়ে নানা সংশয় ও গত তিন মাস ধরে সরবরাহ আংশিকভাবে বন্ধ থাকার পর এবার পুরোদমে এই বিদ্যুৎ আসবে বাংলাদেশে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি হলেও এক্ষেত্রে ছাড় ও কর সুবিধার যে অনুরোধ বাংলাদেশ থেকে করা হয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে আদানি পাওয়ার।

বাংলাদেশে পুরোদমেই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে আদানি

গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানির কোম্পানি আদানি পাওয়ার। তখন বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে ছিল বাংলাদেশ। বিল পরিশোধেও দেরি হচ্ছিল। এর ফলে গত ১ নভেম্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি সমান ইউনিটের মধ্যে একটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে বাংলাদেশের অনুরোধে শীতকালীন নিম্ন চাহিদার কারণে শুধু অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছিল কোম্পানিটি।

সামনেই গ্রীষ্মকাল। বছরের এই সময়টিতে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে। গ্রীষ্মকালীন এই চাহিদার আগে এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) অনুরোধে আদানি পাওয়ার আগামী সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ, অর্থাৎ ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে রাজি হয়েছে।

তবে বিপিডিবির আরও কিছু চাওয়া, যেমন—ছাড় ও কর সুবিধা, যা কোটি কোটি ডলারের সমতুল্য হতে পারে, তা মানতে রাজি হয়নি আদানি পাওয়ার। রয়টার্স বলছে, মঙ্গলবার উভয় পক্ষের একটি ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে এবং আলোচনাগুলো আরও চলবে বলে জানা গেছে।

আদানি পাওয়ারকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশি একটি সূত্রের বরাতে রয়টার্স বলছে, ‘তারা এক ডলারও ছাড় দিতে চায় না। আমরা কোনো ছাড় পাইনি। আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়া চাই। কিন্তু তারা পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট অনুসরণ করছে।’

বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে কয়েক দিন আগেই রয়টার্সকে তিনি জানিয়েছিলেন, আদানির সঙ্গে এখন আর বড় কোনো সমস্যা নেই এবং পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শিগগিরই শুরু হবে। বর্তমানে আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ কেনা বাবদ প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি পরিশোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আদানি পাওয়ারের এক মুখপাত্রের কাছে জানতে চায় রয়টার্স। তবে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এদিকে, বাংলাদেশ আদালত আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্ত পর্যালোচনা করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি গঠন করেছে, যা চলতি মাসের মধ্যেই তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে। এই পর্যালোচনার ভিত্তিতে চুক্তির শর্ত পুনর্নির্ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে।  

২০২৪ সালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আদানির বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে, যেখানে বলা হয় যে আদানি তাদের ঝাড়খণ্ড প্রকল্পের জন্য ভারতের কাছ থেকে কর-সুবিধা পেলেও তা বাংলাদেশকে স্থানান্তর করেনি।  

এদিকে, গত নভেম্বরে মার্কিন প্রসিকিউটররা আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি ও সাতজন নির্বাহীকে ভারতের ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।  যদিও আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।  

গত সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার আমলে স্বাক্ষরিত বড় বড় জ্বালানি চুক্তিগুলোর পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে, যা আদানির সঙ্গে করা চুক্তিও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।

দেখুন: ২৩ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করছেন নাহিদ?

আরও: পদত্যাগ করবেন কি উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদ-মাহফুজ? 

আরও পড়ুন: নির্বাচনে অংশ নেবে ছাত্রদের দল, কি করবেন ড. ইউনূস? 

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন