সাঁওতাল জাতিগোষ্ঠী। সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে, অনন্য এক জাতি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে অগ্রণী তারা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও লড়েছে সম্মুখ সমরে। এখনো নানা কারণে, প্রায়ই খবরের শিরোনামে উঠে আসে সাঁওতালরা। ভারতে তাদের ভাষা স্বীকৃত। কিন্তু, বাংলাদেশে এই ভাষায় পড়াশোনা, উপেক্ষিত রয়ে গেছে এখনো।
উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন। প্রসঙ্গটি আসলে, মনের পর্দায় ভেসে ওঠে বহু রাজনীতিক আর সংগ্রামীদের নাম। কিন্তু, সেই আন্দোলনের ভিত রচনা করেছিলো যারা, তারা অনেকটাই উপেক্ষিত। বলছিলাম, সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর কথা।
১৮৫৫। একপক্ষে তির, ধনুক, দেশি অস্ত্র, অন্যপক্ষে কামান, গোলাবারুদ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ইতিহাসে পরিচিত সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও প্রাণ দিয়েছে এই জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে প্রায় আড়াই লাখ সাওঁতালের বাস। ভাষা, সংস্কৃতি আর অধিকার রক্ষার উদ্যোগে, অন্য জাতির মতো তারাও উপেক্ষিত অনেকটাই। নানান কারণে প্রায়ই তারা আলোচনায় আসে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে।
তাদের ভাষা এক। কিন্তু, অঞ্চলভেদে লিখনরীতি ভিন্ন। বাংলা, অসমিয়া, দেবনাগরি, ওড়িয়া, নেপালি ও রোমান। প-িত রুঘুনাথ মুর্মু আবিষ্কৃত অলচিকি বর্ণমালাও ভারতে বেশ জনপ্রিয়। চালু হয়েছে সাঁওতালি উইকিপিডিয়া।
বাংলাদেশে কেউ বাংলা, কেউ রোমান, কেউ আবার অলচিকি- তিন ভাগে বিভক্ত। এখনো দাঁড়ায়নি ভাষাটির কোনো একক লিখিত রুপ। ভেস্তে গেছে, প্রাক প্রাথমিকের সরকারি উদ্যোগও।
এমন অবস্থায়, মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় পড়ালেখা করতে হচ্ছে, সাঁওতালি শিশুদের।
ইতিহাসবিদ মেজবাহ কামাল মনে করেন, সংকট সমাধানে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে পারে, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট।
আব্দুল্লাহ শাফী/ফই
Leave a Reply