বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ পুলিশের চার ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন)-এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে এই চার ডিআইজিকে অবসর প্রদান করা হয়েছে।
অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন- এন্টি টেররিজম ইউনিটে কর্মরত ডিআইজি মো. নিশারুল আরিফ, নৌ পুলিশের কর্মরত ডিআইজি মো. আব্দুল কুদ্দুছ আমিন, হাইওয়ে পুলিশের কর্মরত ডিআইজি মো. আজাদ মিয়া, এবং এনডিসি ও আমেনা বেগম। প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই কর্মকর্তারা তাদের অবসরজনিত সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।

গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে
বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনের সময় যেসব পুলিশ কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই চার কর্মকর্তাও ২০১৮ সালের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সরকারের এমন পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো, দেশের প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করা এবং জনস্বার্থে যেসব কর্মকর্তা বিতর্কিত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। ২০১৮ সালের নির্বাচনে পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাদের মধ্যে যারা ২৫ বছর চাকরি করেছেন, তাদের মধ্যে যাদের ভূমিকা বেশি বিতর্কিত ছিল, তাদের অবসরে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এই প্রজ্ঞাপনের পর, সরকারের পক্ষ থেকে আরও কিছু কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হতে পারে। এর আগে গত বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জেলা প্রশাসককে ওএসডি (অফিস অব স্পেশাল ডিউটি) করা হয়েছে। এর আগে আরও ১২ কর্মকর্তা ওএসডি হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, বিশেষ করে নির্বাচনী সহিংসতা এবং বিতর্কিত কাজের জন্য পুলিশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হচ্ছে। এতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কোনো ধরনের শিথিলতা প্রদর্শন করা হয়নি।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তটি সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন, যেখানে তারা সমাজের প্রতি পুলিশের দায়িত্ব পালনের সঠিক এবং স্বচ্ছতার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অবসরে পাঠানো এই কর্মকর্তারা বিধি অনুযায়ী তাদের অবসর সুবিধাদি পেয়ে থাকবেন।
এ ছাড়া, পুলিশ বাহিনীর মধ্যে আরো কিছু পরিবর্তন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, যেসব কর্মকর্তা শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছেন এবং বিরোধী দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারি সিদ্ধান্তে আরো নতুন দিক প্রক্রিয়াধীন থাকবে এবং দেশের প্রশাসনিক পরিবেশে আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে এমন পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পড়ুন:বাংলাদেশ ডাক বিভাগে বড় নিয়োগ
দেখুন :টাকার নোটে থাকছে না বঙ্গবন্ধুর ছবি
ইম/

