প্রায় ১৫ বছর পর পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ (এফওসি) শীর্ষক এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে অংশ নিতে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক ইশরাত জাহান।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন। বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কানেক্টিভিটি, আকাশপথে যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, কৃষি, সংস্কৃতি ও খেলাধুলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া সার্ক, ওআইসি ও ডি-৮ এর মতো বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে এ ধরনের আলোচনা দু’দেশের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্পর্ক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। ২০১০ সালে সর্বশেষ ইসলামাবাদে এ ধরনের বৈঠক হয়েছিল। ২০০৫ সালে হয়েছিল অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক। এবারের আলোচনায় সেই কমিশন পুনরায় সক্রিয় করার বিষয়টিও উঠে আসে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ আন্তরিক হলেও এখনো রয়েছে কয়েকটি অমীমাংসিত ইস্যু। ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, সম্পদের হিস্যা এবং বৈদেশিক সহায়তার পাওনা পরিশোধের দাবিতে বাংলাদেশ অনড় অবস্থানে রয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, “আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। এটা বাংলাদেশের স্বার্থে। তবে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান ছাড়া সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। আশা করি, পাকিস্তান এসব বিষয়ে গঠনমূলক অবস্থান নেবে।”
সূত্র মতে, চলতি মাসেই পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশ সফর করবেন। এই সফরে দ্বিপক্ষীয় কয়েকটি চুক্তি সই হতে পারে। তার সফরসঙ্গী হিসেবে আসবেন পাকিস্তানের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দলও।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই বৈঠককে ঘিরে কূটনৈতিক মহলে আশা করা হচ্ছে, দু’দেশের সম্পর্ক নতুন গতি পাবে। তবে পুরোনো ইস্যুগুলোর সমাধান ছাড়া সেই অগ্রগতি কতটা টেকসই হবে, তা নির্ভর করছে পাকিস্তানের অবস্থানের ওপর।
পড়ুন: পাকিস্তান কি বাংলাদেশের ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার দেবে?
দেখুন: যুক্তরাষ্ট্র-চীনের দ্বন্দ্বে জড়াবে কী বাংলাদেশ? |
ইম