রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সংকটে এক মাসের এক কন্যাশিশুর মৃত্যুর হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে হাসপাতালে আনার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত শিশুটি উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের রিটন চাকমার সন্তান। শিশুর বাবা রিটন চাকমার অভিযোগ, হাসপাতালে কোনো অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকায় যথাসময়ে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। পরে বিকল্প উপায় সিপিআর দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি।
তবে বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ বনি জানান, বাচ্চাটি হাসপাতালে আনার পর আমরা পালস পাইনি। আসলে বাচ্চাটি মৃত ছিল। তবুও আমরা জীবিত ভেবে বাচ্চাটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। মেডিকেল প্রসিডিওর অনুযায়ী বাচ্চাকে সিপিআর দেয়া হয়েছে। বাচ্চার মায়ের ভাষ্য অনুযায়ী, বাচ্চাটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। মৃত বাচ্চাকে তো বাঁচানোর সাধ্য নেই। অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে মারা গিয়েছে, বিষয়টি আসলে সে রকম না। আমাদের অক্সিজেন নেওয়া রোগী হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে, শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আলোচনায় উঠে এসেছে আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনবল ও চিকিৎসক সংকটের কথা। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদটিও এখন শূন্য। খোদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং সিভিল সার্জন (সিএস) চিকিৎসক সংকটের কথা বলছেন।
জানতে চাইলে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত অভিযোগ পাচ্ছি। জনগণ বিভিন্ন অভিযোগ দিচ্ছেন, আজকেও (শুক্রবার) একটা ঘটনা ঘটেছে। অক্সিজেনের অভাবে একটি শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছেন এসব বিষয়ে তাদের সঙ্গেও আমরা বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি। এখানে আসলে যথেষ্ট চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। ১৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন ৪ জন। তারাও সব সময় উপস্থিত থাকেন না। একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, এখন সেটিও নষ্ট। বিভিন্ন মেডিকেল সরঞ্জামেরও সংকট তো রয়েছেই।
এদিকে, রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেন, বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন মেডিকেল অফিসার পদায়ন করা হয়েছে। তবে তিনি এখনো যোগদান করেননি। হাসপাতালে একজন কর্মকর্তার দরকার, সেটি এখন নেই।
পড়ুন : চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে ১৮৩ পাহাড়ি শিক্ষার্থীর যৌথ বিবৃতি