২৬ অক্টোবর বাফুফে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইতোমধ্যে সাত মাস সময় পেরিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বাফুফের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পর্যালোচনা ও সামনের ছয় মাসের পরিকল্পনা নিয়ে মূলত আজ বাফুফে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেছে।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল সহ নির্বাহী কমিটির আরো ১৩ জন বক্তব্য রেখেছেন। বাফুফে কর্তাদের বক্তব্যের পর আবার সাংবাদিকদের প্রশ্ন ও পর্যবেক্ষণ ব্যক্ত করেছেন। সেটার উত্তরও দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। প্রায় আড়াই ঘন্টা ব্যাপী সেই সংবাদ সম্মেলনের নানা অংশ তুলে ধরা হচ্ছে-
২৬ অক্টোবর বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছিলেন। ৯ নভেম্বর প্রথম নির্বাহী সভায় গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি হয়েছিল। সেই কমিটির মেয়াদ ছিল তিন মাস। ঐ কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও পরবর্তীতে আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। আজ বাফুফের সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি তাবিথ আউয়াল নিজেই এর উত্তর দিয়েছেন, ‘আমাদের গঠনতন্ত্র কাজ অনেকটা গুছিয়ে এসেছে। সামনে নির্বাহী কমিটিতে একটা প্রস্তাবনা উঠবে। এরপর নভেম্বরের দিকে এজিএমে এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আসবে।’
এএফসি ও সাফের নির্ধারিত সূচির বাইরে থাকে ফিফা উইন্ডো। বাংলাদেশ নারী ও পুরুষ উভয় ফুটবল দলের ক্ষেত্রে সামনে ফিফা প্রীতি ম্যাচে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ খুঁজবে বাফুফে। সেপ্টেম্বর উইন্ডোতে বাফুফে হামজা-জামালদের ১১০-১৪০ র্যাংকিংধারী ইউরোপের দলগুলোর বিপক্ষে খেলাতে চায়।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রীতি ম্যাচে আমাদের ভাবনা আরও শক্তিশালী দলগুলো বিপক্ষে খেলা, যাতে দল আরও উন্নতি করতে পারে। এখন আমরা এশিয়ান কাপের জন্য লড়াই করছি। ভবিষ্যতে অলিম্পিক কোয়ালিফাই আসবে, বিশ্বকাপ বাছাই আসবে, সেক্ষেত্রে প্রস্তুত হওয়ার জন্য ওই মানের দলের বিপক্ষে খেলতে হবে।’
বাংলাদেশের ফুটবলে সবচেয়ে বড় অংশীদার প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো। সেই ক্লাবগুলো বছরে কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও এর বিপরীতে বাফুফের কাছ থেকে প্রাপ্য সম্মান পায় না। সিঙ্গাপুর ম্যাচে বাফুফে ক্লাবগুলোকে মাত্র দু’টি টিকিট দিয়েছে। বাফুফে সভাপতি আজ সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন, ‘ক্লাবগুলোকে আরো বেশি টিকিট দিতে পারলে ভালো হতো। আগামীতে এই সংখ্যা একটু বাড়ানোর চেষ্টা করব।’
শুধু টিকিট নয় ক্লাবগুলো ফেডারেশন থেকে তেমন অর্থ সাহায্যও পায় না। লিগের পৃষ্ঠপোষকতা থাকলেও ক্লাবগুলো অংশগ্রহণ ফি, প্রাইজমানি থাকে বকেয়া। বাফুফে সভাপতি আজকের সংবাদ সম্মেলনে ক্লাবগুলোকে আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি আরো বেশি ট্যাকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচের উন্মাদনা ছিল অনেক। সেই উন্মাদনার মধ্যে বাফুফের ব্যবস্থাপনায় ছিল অনেক ভুল-ক্রুটি। বিশেষ করে দর্শকদের সাত ঘন্টা আগে গ্যালারীতে প্রবেশ করানো হয়। এরপর ছিল পানির সংকট এবং উচ্চ দামে পানি বিক্রির ঘটনা। নিরাপত্তা সহ সামগ্রিক ঘটনায় বাফুফে এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচে প্রয়োগের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তবে গ্যালারীতে অধিক দামে পানি বিক্রি কারা কিভাবে করল সেটার সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর ম্যাচের আয়-ব্যয়ের হিসাব পাওয়া যাবে বলে সভাপতি জানিয়েছেন।
ফুটবল মাঠের খেলা। সেই মাঠ কমিটিই নেই বাফুফের। ঘরোয়া ফুটবলের একটি মৌসুম শেষও হয়েছে রেফারিজ কমিটি ছাড়া। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল নতুন মৌসুম শুরুর আগেই সেই সকল কমিটি গঠনের আশ্বাস ব্যক্ত করেছেন। নারী ফুটবল কমিটি থাকলেও সেটা এখনো পূর্ণাঙ্গ তালিকা পায়নি। কমিটির চেয়ারম্যানই একক সিদ্ধান্ত নেন। আবার অনেক কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলেও আনুষ্ঠানিক সভা ছাড়াই অনেক সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে। অগণতাান্ত্রিক ও অসাংগঠনিক চর্চা আগামীতে কমিয়ে আনারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
