আবারও ফিফার নির্দেশনা উপেক্ষা করলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কাউন্সিলর কমানোর নির্দেশনা দিলেও তা এড়িয়ে পুরোনো পথে হেটেছে তারা। এছাড়া, চলতি বছরে বেশ কয়েকবার ফিফার শাস্তির মুখে পড়েছে ফুটবলের সংস্থাটি। এই অবস্থায় আরও অন্ধকারের দিকে দেশের ফুটবল।
অতীতে বাংলায় ছিল ফুটবলের জোয়ার। বলা হতো জনতার , একতার ফুটবল। গ্যালারিতে আঁচড়ে পড়তো আনন্দ, উচ্ছাস, কান্না, কথার লড়াই, হাতাহাতি..আরও কত কি ! তবে দিন যেতে যেতে যেন যমের দুয়ারে বাংলার ফুটবল।
গেলো ২৯ জুন অনুষ্ঠিত হয় বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভা। সেখানেও এক লুকোচুরি লুকোচুরি খেলা। বাফুফের নির্বাচন মানেই যেনো ভোটারদের রমরমা বাজার। চোখ এড়ায়নি ফিফার। ২০২০ সালের নির্বাচনে নিয়ে প্রশ্ন তোলে ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংস্থাটি। নির্দেশনা দেয়া হয় নির্বাহী কমিটির সংখ্যা ২১ থেকে কমিয়ে যেনো করা হয় ১১ থেকে ১৪। তবে সে কথা গায়ে মাখেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
বাফুফে কর্তাদের নিয়ে বেশ বিপাকে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে প্রায় ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় ,তাতেও টনক নড়েনি কাজী সালাউদ্দীন-সালাম মুর্শেদীদের। গেলো বছরের এপ্রিলেও এদেশের ফুটবল পার করেছে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। আর্থিক কেলেংকারিতে ২ বছরের জন্য বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করে ফুটবলের সবচেয়ে বড় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপরই সামনে আসে নতুন কিছু ঘটনা। যাতে ফেঁসে গেছেন আরও কয়েকজন।
২৩ মে, ২০২৪. . . . . বাফুফের পাঁচ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি দেয় ফিফা। যেখানে সবচেয়ে বড় নাম সাবেক ফুটবলার ও বাফুফের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান, সালাম মুর্শেদী। প্রায় ১৩ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হয় এই বাফুফে কর্তাকে। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনে ভীষন দক্ষ মিস্টার সালাম মুর্শেদী। তার ভাষ্য অনুযায়ী ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান বলেই জরিমানা গুনতে হয়েছে তাকে, করেননি কোন নয়-ছয়। গুলশানের বাড়ি নিয়েও প্রশবাণে জর্জরিত মিস্টার সালাম মুর্শেদী। যা সবার প্রথমে সামনে নিয়ে আসেন হবিগঞ্জ চার আসনের এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এখন দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল। এটাকে সরকারের সম্পত্তি বলে ঘোষণা দেয় হাইকোর্ট।
এই যখন বাফুফের আমলনামা, তাহলে ফুটবলের সুদিন ফিরবে আবারও , এই স্বপ্ন দেখা নিছক বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়। কাড়ি কাড়ি টাকা বানাচ্ছেন কর্তারা আর এদিকে ফুটবল রসাতলে। এতসব আর্থিক জরিমানা, নিষেধাজ্ঞার পরেও নিজেদের চেয়ার আকড়ে ধরে পড়ে আছেন বাফুফে কর্তারা। যেনো দেখার নেই কেউ। কথায় আছে মরা মানুষের চুল ছিড়লে ওজন কমে কি! অনেকটা এমনই, এতসব অভিযোগ অনিয়ম তবুও পদ ছাড়তে রাজি নন কেউই।
আসবে কবে দিন বদল, কালো ছায়া থেকে কবে মুক্ত হবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, সব অপশক্তিকে গুড়িয়ে কবে আসবে নতুন এক স্নিগ্ধ ভোর, সেটারই অপেক্ষা এদেশের ফুটবলপ্রেমী জনতার।