২৩/০৫/২০২৫, ১৪:৩৩ অপরাহ্ণ
31 C
Dhaka
২৩/০৫/২০২৫, ১৪:৩৩ অপরাহ্ণ

বালুমহাল বন্ধের দাবিতে দিনাজপুরের খানসামায় মশাল মিছিল

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আত্রাই নদীর ভাঙন থেকে ফসলি জমি রক্ষা, পথচারী চলাচলে দুর্ভোগ নিরসন ও পরিবেশবান্ধব ঝাড়বাড়ী গড়ার লক্ষ্যে ও বলদিয়াপাড়া বালুঘাট বন্ধের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ি এলাকার শান্তি চত্ত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেছন।

জানা গেছে, শতগ্রামের জয়গঞ্জ ঘাটে বালু না থাকলেও সম্প্রতি সেখানে বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে আশপাাশের কয়েকটি এলাকায়। আন্দোলন শুরু করেন, ভুক্তভোগী কৃষক, এলাকাবাসী ও নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে অপরিকল্পিতভাবে বালুতোলায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন স্থানে গভীর গর্ত করায় আশপাশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ কারণে প্রায় ২০০ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আর জমি হারাতে চান না। শেষ সম্বল রক্ষায় বাধ্য হয়েছে আন্দোলনে নেমেছেন এলাকাবাসী। এরই অংশ হিসেবে মশাল মিছিল থেকে তারা অবশিষ্ট ফসলি জমি রক্ষা এবং ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।

মশাল মিছিলটি বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় ‘দাবি মোদের একটাই, বালুমহাল ইজারা বাতিল চাই’, ‘বালুখেকোর চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘বালুখেকোর ঠিকানা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘দালালদের চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘বালুখেকো নিপাত যাক কৃষক পাবে পেটে ভাত’, ‘সর্বস্তরের জনগণ গড়ে তোলো আন্দোলন’, ‘ঝাড়বাড়ির শত্রুরা হুঁশিয়ার সাবধান’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন কৃষকরা।

ওই এলাকার গড়ফতু গ্রাম ও কাশিমনগর অংশে বলদিয়া পাড়া বালুমহাল আড়াই বছর আগে স্থানীয়দের জানমাল রক্ষার আন্দোলনের মুখে বাতিল হয়ে। সেটি আবারো ইজারা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২২ সালে ইজারা বাতিল হওয়ার পর থেকে নিরাপদেই ছিল স্থানীয় কৃষি ও জীববৈচিত্র। আশপাশের চাষিরা নানা ফসল ফলিয়ে আবারো স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু সেখানে পুনরায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় জনমত উপেক্ষা করে প্রশাসনের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে হতবাক ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আর সে কারণেই ২০২২ সালের মত আবারো ফসলি জমি রক্ষায় ইজারা বাতিল দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী কৃষক আবদুল মতিনের সভাপতিত্বে মশাল মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, গড়ফতু উদয়ন ক্লাবের সভাপতি হামিদুর রহমান, আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক, ছাত্রনেতা মনিরুজ্জামান মনির, ঝাড়বাড়ী-জয়গঞ্জ খেয়াঘাট সেতু বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শেখ জাকির হোসেন প্রমুখ। এ সময় মিছিলে অংশ নেন হাজারো ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দা।

আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘আমরা আশা করছিলাম জেলা প্রশাসন পরিদর্শন করে অল্প সময়ের মধ্যেই ইজারাটি বাতিল করবে, কিন্তু তা হয়নি। জেলা প্রশাসন ইজারা বাতিলের কালক্ষেপণ করায় এই মশাল মিছিল। এরপরেও বালুমহালের ইজারা বাতিল না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

বালু ইজারাদার বলেন, বালুমহাল সর্বোচ্চ দরে নেওয়া হয়।

যাহার মূল্য ২ কোটি ২০ লাখ ৯ শত ৯৯ টাকা। ভ্যাটসহ প্রায় ৩ কোটি টাকা। অত্র অঞ্চলের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের পদধারী কিছু কুচক্রি মহল সরকারের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করছেন। শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ ইজারার পক্ষে এবং ঘাটটি ১০ বছর ধরে চলমান রয়েছে সেই সাথে সরকার দিনাজপুর জেলার মধ্যে বড় ধরনের রাজস্ব আদায় করছে। ঘাটটি চালু না হলে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হবে।

ইজারা বাতিলের বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি ফোন করার কারণ জানতে চান। এ সময় বালুমহালের কথা তুলতেই আরেকটি কল এসেছে বলে লাইনটি কেটে দেন। কিছুক্ষণ পরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পড়ুন: ৬ দফা দাবিতে নরসিংদীতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের কাফনের কাপড় পড়ে মিছিল

দেখুন: বিয়ের দাবিতে যুবকের বাড়িতে দুই সন্তানের জননীর অনশন |

ইম/

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন