কিশোরগঞ্জে শহরে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গৌরাঙ্গবাজারের ফুটপাত দোকানদার ও হারুয়া এলাকাবাসী কর্তৃক আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ অভিযোগ করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
তারা অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীরা ছাত্র-জনতার উপর সশস্ত্র হামলা ও নির্বিচারে গুলি চালায়। সে ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ক্ষমতার পালাবদল হলেও চাঁদা দেওয়ার রেওয়াজ বদল হয়নি । গত ৫ আগস্ট এর পর থেকে কিশোরগঞ্জের গৌরাঙ্গবাজার এলাকায় সড়কে, ভ্যানে, ব্রীজে, কিছু হকার ব্যবসা করে জিবীকা নির্বাহ করে আসছে। প্রায় সময় সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীরা এসে এই হকারদের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছেন।

মানববন্ধনে হকাররা বলেন, আগে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রতিটি ভ্যান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা এবং মাসে ৩ হাজার টাকা নিতেন এবং প্রতিটি ভ্যান গাড়ী থেকে এককালীন ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নিতেন। এখন বিএনপি পরিচয়ে কিছু লোক দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা চাঁদা নিচ্ছেন।
হকররা আরও বলেন, বিএনপির নাম ব্যবহার করে জেলা শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাদিম মাহমুদ হারুন ও পৌর সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব জাকারিয়া মাহমুদ ঝুমন এর হুকুমে গত ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে ওয়ালীনেওয়াজ খান কলেজের ডিগ্রী প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াদ আহমেদ রাহুলের কাছ থেকে চাঁদা আনতে গেলে রাহুল চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় রাহুলের হাতের কবজি কেটে দিয়েছে সন্ত্রাসী সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীরা।
তাঁরা বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারী দুপুর দেড়টার দিকে গৌরাঙ্গবাজারের হকার ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খলিলের কাছ থেকে চাঁদা আনতে গেলে খলিল চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীরা। পরে তার হাত-পা ভেঙ্গে নির্জন জায়গায় ফেলে রেখে চলে যায়।
তাঁরা আরও বলেন, অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সুমন মাহমুদ ও তাদের ভাইদের নামে কিশোরগঞ্জ মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মাদক, ধর্ষণ সহ ৮ থেকে ১০টি মামলা বিচারাধীন আছে। সন্ত্রাসী সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে এবং মোবাইল ফোনে হকারদের চাঁদা দেওয়ার জন্য হুমকি প্রদর্শন করে আসছে। অবিলম্বে সুমন মাহমুদ ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।

মানববন্ধনে কিশোরগঞ্জ পৌর কৃষক দলের আহবায়ক তৌহিদ হাসান, ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক ইব্রাহীম মিয়া,
ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি হাবিবউল্লাহ, বিএনপি নেতা মোবারক মিয়া, মুর্শেদ মিয়া, কাউছার। এছাড়াও এলাকাবাসীর পক্ষে মো: মুন্না, আসলাম, শাহীন, রুমালি আক্তার, চামেলি আক্তার, পলি বেগম, শারমিন আক্তার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযান অব্যাহত আছে, অচিরেই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি। যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপিটি প্রেরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
পড়ুন : ১৯ ও ২১ মার্চ বিএনপির ইফতার
দেখুন : বিএনপির বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ |
ইম/