39.2 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৮, ২০২৫

বিএসইসি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পদত্যাগ না করলে বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি

দিনের বড় সময়জুড়ে ভবনের ফটক আটকে আন্দোলনের পর বিকালে সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসির চেয়ারম্যান ও সব সদস্যের পদত্যাগ দাবি করেছেন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবারের মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।

বুধবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয় থেকে সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও সদস্যরা সেনাসদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় চলে যাওয়ার পর আন্দোলনকারীদের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম সংবাদিকদের কাছে দাবির বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবারের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমরা সবাই কর্মবিরতিতে যাব। আমরা অফিসে আসব, কাজ করব না।”

কর্মকর্তাদের অভিযোগের বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, “বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ও ২৫ বছর চাকরি সমাপ্ত করায় বিধি মোতাবেক কমিশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে ৪ মার্চ অবসর প্রদান করা হয়।

“এই ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা বিএসইসি চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের কমিশনের বোর্ড রুমে চলমান সভায় জোরপূর্বক ঢুকে অবরুদ্ধ করে। তারা কমিশনের কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা দিয়ে দেয়, সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অরাজক, ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন।”


তার অভিযোগ, “(তারা) অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে ও পেশি শক্তি প্রদর্শন করে। একই সাথে তারা চেয়ারম্যানের সদ্য যোগ দেয়া পিএস (একান্ত সচিব), যিনি সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব তাকে লাঞ্ছিত করেন।’’

এর আগে বেলা সোয়া ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিএসইসির মূল ফটক বন্ধ ছিল। কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি।

সাড়ে ৩টার কিছু আগে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে ভেতরে অবস্থান নেয়; আসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।

মঙ্গলবার নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর দাপ্তারিক আদেশ দেয় বিএসইসি চেয়ারম্যান। তার পরদিনই এই ঘটনা ঘটল।

এদিন বিকাল ৪টায় আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম দাবি করেন, কমিশনের আইন অনুযায়ী নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়নি। তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে ‘সরকারি কর্মচারী বিধি’ অনুযায়ী। কিন্তু কমিশনের কর্মচারীদের বেলায় তা প্রযোজ্য না।

কমিশনের কর্মচারীদের বেলায় কমিশন আইনে বলা আছে। সে অনুযায়ী শাস্তি দিলে মেনে নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

কর্মচারীদের মধ্যে যাদের কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করার দাবি জানিয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, দাবি না মানলে কর্মবিরতিতে যাব।

দাবিগুলো কমিশন চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে দাবিগুলো অযৌক্তিক। সবকিছু আইন মেনে করা হয়েছে।

“তারা সব সময়ই বলেন, আইনের বাইরে কিছুই করেন না।”

এই কমিশনের অধীনে কাজ না-করার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।

এটিসহ পাঁচটি দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এরপর তারা একে একে বিএসইসি কার্যালয় ত্যাগ করেন।

বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে সেনাসদস্যরা বিএসইসি ত্যাগ করেন। পরে সোয়া ৫টার সময় পুলিশের অতিরিক্ত সদস্যরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান।

নিয়মিত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ সদস্য ও বিএসইসির নিরপত্তা কর্মীরা মূল ফটকের পাহারায় রয়েছেন।

কমিশনের সদস্যদের জিম্মি করা হয়েছে এমন অভিযোগে মাহবুবুল আলম বলেন, “আমরা কাউকে জিম্মি করিনি, অবরুদ্ধ করিনি। আমরা আলোচনার জন্য গিয়েছিলাম।”

বিএসইসির কর্মচারীদের ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান চৌধুরী ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

পড়ুন : বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি, সেনা পাহারায় কার্যালয় ত্যাগ

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন