ফিলিস্তিন দখলকারী ও গণহত্যাকারী অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের গণহত্যা থামাতে বৈশ্বিক জিহাদ অনিবার্য্য হয়ে উঠেছে বলে এমন মন্তব্য করেন উত্তরা এলাকার বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ, ছাত্র-জনতা ও এখানকার আলেম ওলামাগণ। সোমবার ৭ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে বিভিন্ন ব্যানার ফ্যাস্টুন নিয়ে বিকাল পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্র-জনতা।
বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, অবৈধ ইসরাইল রাষ্ট্রের সমূলে বিনাশ না ঘটা পর্যন্ত ধর্ম-বর্ণ ও দল-মত নির্বিশেষে সমগ্র মানবিক বোধ সম্পন্ন মানুষকে নিয়ে এ আন্দোলন চালিয়ে যাবে তারা। এ সময় তারা আমেরিকার ও ইসরায়েল বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক আব্দুল্লাহপুর, হাউজ বিল্ডিং, বিএনএস সেন্টার, জসিমউদদীন, বিমানবন্দর গোলচক্কর, রাজলক্ষি, উত্তরা পূর্বথানা, আজমপুর এলাকা মাতিয়ে তুলেন।
তাদের সাথে বিক্ষোভ মিছিলে যুক্ত হয় উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ ও আলেম ওলামাগণ বলেন, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা পৃথিবীর সমস্ত নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়েছে। এছাড়াও কথিত মানবাধিকারের ধ্বজাধারী আমেরিকার বিবেক গণহত্যাকারী জায়োনিস্ট ইসরাইলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমেরিকার প্রত্যক্ষ সমর্থন ও সহযোগিতায় অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের ওপর বছরের পর বছর দখলবাজি ও বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সারখ্যাত দেশটি।
এ সময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী উত্তরা ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ, ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি, বি আর এ সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স অফ টেকনোলজি, বিজিএমই ইউনিভারসিটি ফ্যাশন অফ টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্বিকারচিত্তে শুধু দেখেই যাচ্ছে, কারণ ফিলিস্তিনিরা মুসলমান। মুসলমানের মানবাধিকার ‘নাই’ করে দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ইতিহাসের ভুল পথে হাঁটছে, যা তাদের জন্য আত্মঘাতী।

মার্কিন শাসকগোষ্ঠীকে এই রাষ্ট্রীয় দাসত্বনীতি থেকে বের করে আনার রাজনৈতিক উদ্যোগ আমেরিকার জনগণকেই নিতে হবে বলে তারা স্মরণ করে দিয়ে বলেন, আমেরিকার জনগণ তাদের শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে না পারলে পৃথিবীতে মানবতার কোনো মূল্যই আর থাকবে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের হামলা বন্ধের প্রতিবাদে উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগ, দিয়াবাড়ী, কামারপাড়া, খিলখেত ও আসকোনা এলাকা থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসার ছাত্র ও আলেম ওলামাগণ গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে তাদের ওপর ইসরাইলের চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে সকাল থেকে উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক বিএনএস সেন্টারে জড়ো হয়।
হাজার হাজার মানুষের এ গণমিছিলের কারণে বিমানবন্দর মহাসড়কে যান চলাচল কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও উত্তরা পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ, উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ ও ট্রাফিক পুলিশের সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক ছিলো। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই বিক্ষোভকারীরা প্রশাসনের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে বিমানবন্দর মহাসড়ক জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
পড়ুন : ইসরাইলি পণ্য বয়কট ও ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে উত্তরায় মশাল মিছিল