বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আবারও নতুন রেকর্ড গড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অচলাবস্থার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণ কিনছেন। এর সঙ্গে সুদের হার কমতে পারে, এই আশা দামের ঊর্ধ্বগতিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। খবর রয়টার্স
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টা ১২ মিনিটে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ০.৭ শতাংশ বেড়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৩৫ ডলার, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর কয়েক ঘণ্টা আগে দাম উঠেছিল ৪ হাজার ২৪৩ ডলারে। টানা পাঁচ দিন ধরে স্বর্ণের দাম বাড়ছে।
ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম ১.২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ২৫২ দশমিক ৩০ ডলারে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৬১ শতাংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্য বিরোধ শুরু হয়েছে। চীন বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্র এতে ক্ষুব্ধ। এতে বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা বেড়েছে, আর বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিকল্প হিসেবে স্বর্ণে টাকা রাখছেন।
পণ্যবিশেষজ্ঞ নিতেশ শাহ বলেন, নতুন করে বাণিজ্য উত্তেজনা বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন।
তিনি বলেন, এই ঊর্ধ্বগতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতাকেও প্রতিফলিত করছে। তিনি আরও বলেন, স্বর্ণের দাম এখন ৪ হাজার ২০০ ডলারের ওপরে স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা প্রবল।
বাজারে ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ফেডারেল রিজার্ভ) অক্টোবর ও ডিসেম্বরে দুটি ধাপে সুদের হার কমাবে। কম সুদের পরিবেশে সাধারণত স্বর্ণের দাম বাড়ে, কারণ এতে বিনিয়োগ লাভজনক হয়ে ওঠে।
স্টেট স্ট্রিট ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের স্বর্ণ কৌশল প্রধান আকাশ দোশি বলেন, যদি বর্তমান ধারা অব্যহত থাকে তবে ২০২৬ সালের মধ্যে স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ডলারে পৌঁছাতে পারে।
স্বর্ণের দামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রুপার দামেও কিছুটা ওঠানামা দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার রুপার দাম ০.৪ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে দাঁড়ায় ৫২ দশমিক ৮৮ ডলার, যদিও মঙ্গলবার এটি রেকর্ড ৫৩ দশমিক ৬০ ডলারে উঠেছিল।
প্লাটিনামের দাম বেড়ে ১ হাজার ৬৬৯ দশমিক ৬০ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম বেড়ে ১ হাজার ৫৪০ দশমিক ২৫ ডলারে পৌঁছেছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের টানা দুই সপ্তাহের অচলাবস্থা দেশটির অর্থনীতিতে বড় ক্ষতি করছে। এই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি করে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন।
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

