১৪/০৬/২০২৫, ১৭:২৮ অপরাহ্ণ
34.6 C
Dhaka
১৪/০৬/২০২৫, ১৭:২৮ অপরাহ্ণ

বিশ্বের সবচেয়ে ‘গরিব প্রেসিডেন্ট’ মুজিকা আর নেই

উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে ‘পেপে’ মুজিকা, যিনি ‘বিশ্বের সবচেয়ে গরিব প্রেসিডেন্ট’ নামে পরিচিত, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিলো ৮৯ বছর বয়স।

দীর্ঘ এক বছর খাদ্যনালির ক্যানসারের সঙ্গে সংগ্রামের পর মে মাসের শুরুতে তাকে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে নেওয়া হয়, যেখানে তার জীবনযাত্রার শেষ অধ্যায় ঘটে।

মুজিকা একসময় গেরিলা গোষ্ঠী ‘তুপামারোস’-এর সদস্য ছিলেন এবং সামরিক শাসনের সময় ১৩ বছর কারাবন্দি ছিলেন। কারাগারের কঠিন অভিজ্ঞতা তাকে গভীর চিন্তায় ডুবিয়ে দেয়, যা পরবর্তী সময়ে তার রাজনৈতিক দর্শনকে গঠন করে। ২০০০ সালে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে প্রথমে সিনেটর নির্বাচিত হন, পরে পশুপালনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

তার শাসনামলে উরুগুয়েতে গর্ভপাত, সমকামী বিয়ে এবং গাঁজার ব্যবহার বৈধ করা হয়, যা তাকে উদারনৈতিকদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে।

মুজিকার সরল জীবনযাপন ছিল তার রাজনীতির প্রতিচ্ছবি। তিনি সরকারি বাসভবনে না থেকে মন্টেভিডিওর উপকণ্ঠে একটি ছোট্ট খামারে থাকতেন। পরতেন সাদামাটা পোশাক, প্রায়ই স্যান্ডেল পরে সরকারি অনুষ্ঠানে হাজির হতেন। রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতনের প্রায় ৯০ শতাংশ দান করে দিতেন দাতব্য সংস্থায়। তার একমাত্র বিলাসিতা ছিল ১৯৮৭ সালের একটি ফক্সওয়াগন বিটল গাড়ি।

এ কারণেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে গরিব প্রেসিডেন্ট’। তবে তার মতে, ‘আমি গরিব নই। গরিব সেই, যে অনেক কিছু চায় কিন্তু কিছুতেই সন্তুষ্ট নয়।’

রাজনীতি থেকে ২০২০ সালে অবসর নেওয়ার পরও তিনি তরুণদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, যেন তাকে তার খামারে, প্রিয় কুকুরের পাশে সমাহিত করা হয়। তার স্ত্রী লুসিয়া তোপোলানস্কি ছিলেন তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধা।

মুজিকার মৃত্যুতে বিশ্বজুড়ে বামপন্থি ও উদারপন্থি নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। তার জীবন ও আদর্শ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য চিরস্থায়ী শিক্ষা হয়ে থাকবে।

এনএ/

দেখুন: বিশ্বের ‘সবচেয়ে মূল্যবান’ মুদ্রা কোনটি?

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন