ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় অবৈধ মাটির ব্যবসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। হামলার ঘটনার চারদিনেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জড়িতদের দ্রæত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ঢেউ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধনের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের কোষাদক্ষ মোশারফ হোসেন, প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য শাহাজাহান সাজু, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের উদ্যোক্তা ও পরিচালক হারুন অর রশিদ ও শাহীন মৃধা, প্রথম আলোর ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার সভাপতি অভিজিৎ রায় ও সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মিয়া, ঢেউ এর সদস্য শাহাদাত হোসেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সন্ত্রাসী কার্যক্রম যারা করে তাদের কোনো পরিচয় নেই। তারা সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠী। সুষ্ঠু বিচারের জন্যই আজ আমরা দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশ সংবিধান সাংবাদিকদের এই কথা বলার অধিকার দিয়েছে, সকল নাগারিকককে দিয়েছে। সাংবাদিকরা কেন এখনও নিরাপদ না। সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখানো যাবে না এটা সবার বুঝতে হবে। ভয় দেখিয়ে সত্য প্রকাশ থেকে সাংবাদিকদের নির্ভৃত করা যাবে না। ন্যায় বিচারের স্বার্থে হামলায় জড়িত প্রধান আসামী মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সী ও কাইয়ুমসহ সকলকে গ্রেপ্তার করতে হবে। আন্দোন করেই যদি সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে হয়, সাংবাদিকরা তাই করবে। হামলার প্রতিবাদ জানিয়েই যাবে। তারা জড়িতদের সকলকে দ্রæত গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ জানান।
মাইনুদ্দিন রুবেল বডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা। তিনি বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটি দাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তবে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে জেলার বিজয়নগর উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় উপজেলা পরিষদের সামনে মাইনুদ্দিনের ওপর হামলা হয়। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের
নেতা কাইয়ুম মিয়া ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব থেকে বহিস্কৃত ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সির নেতৃত্বে এই হামলা হয়। হামলায় ঘটনায় মোখলেছুর ও কাইয়ুমসহ ১৩জনকে আসামী করে শনিবার রাতে বিজয়নগর থানায় মামলা করেন আহত সাংবাদিক মাইনুদ্দিন। ৫ আগস্টের থেকেই বহিস্কৃত যুবদল নেতা মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সির নেতৃত্বে ও মদদে কাইয়ুম উপজেলার সর্বত্রই অবৈধভাবে মাটির ব্যবসা করে আসছেন। উপজেলার পুকুর ও ফসলি জমি ভরাটসহ কৃষি জমির মাটি কেটে ট্রাক্টরে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে
আসছেন। নাকের ডগায় অবৈধ মাটির এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসলেও রহস্যজনক কারণে নিরব উপজেলা প্রশাসন। হামলার ঘটনায় মোখলেছুর রহমান ও কাইয়ুমসহ১৩জনকে আসামী করে শনিবার রাতে বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন আহত সাংবাদিক মাইনুদ্দিন। কিন্তু হামলার ঘটনায় জড়িতের কাউকেই এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
পড়ুন: যুব সমাজকে পরিচর্যার মাধ্যমে উন্নয়নের মডেল হতে পারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কবীর ভূঁইয়া
দেখুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাঁশ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার কারণ কী?
ইম/